পানির অভাবে হাওরের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। তাই ভবিষ্যৎ চাষাবাদের কথা ভেবে পানি সংরক্ষণের জন্য নিজ জমিতে পুকুর খনন করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের বাসিয়া নদীর মটুকোনা নামক স্থানে সংযুক্ত কালিজুরী হাওর হয়ে বাউসি কাশিমপুর হাওর পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘের খালটি ধীরে ধীরে ভরাট ও প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। এ কারণে খালটি প্রায় অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। ফলে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কালিজুরী ও মটুকোনা গ্রামসহ আশপাশ গ্রামের কৃষকরা পানির অভাবে হাওরের চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক সময়ে ওই খালের পানি দিয়েই হাওরের জমিগুলোতে চাষাবাদ হতো। কিন্ত বর্তমানে পানির অভাবে হাওরের কয়েক হাজার হেক্টর বোরো জমি অনাবাদি পড়ে আছে।
সূত্র আরও জানায়, কালিজুরী হাওর এলাকায় খননের অভাবে খালটি নালায় পরিণত হয়েছে। চাষাবাদের সুবিধার্থে পানি সংরক্ষণের জন্য অনেকেই তাদের নিজ জমিতে পুকুর খনন করছেন। আর খননকৃত মাটি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ব্রিক ফিল্ডে।
স্থানীয়রা জানান, এক সময়ে খরস্রোতা এই খালটির প্রস্থ ছিল ২০-২৫ ফুট। খাল দিয়ে বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। কিন্ত ধীরে ধীরে ভরাট হয়ে ও প্রভাবশালীদের দখলে খালটি এখন ৫-৭ ফুট প্রস্থে নেমে এসে ছোট নালায় পরিণত হয়েছে।
কালিজুরী গ্রামের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, ‘এক সময় পুরো বোরো মৌসুমে এই খালের পানি দিয়ে হাওরের কৃষকরা অনেকটা অনায়াসে বোরো আবাদ করতেন। কিন্তু খালটি দখল ও ভরাট হওয়ায় পানির অভাবে পুরো হাওরের কয়েক হাজার একর ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে আছে।’
তিনি বলেন, ‘চাষাবাদের জন্য এখন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় পানি সংরক্ষণের জন্য আমি ও আমার চাচাতো ভাইকে নিজ জমিতে পুকুর খনন করতে হচ্ছে।’ তবে খালটি পুনঃখননের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, ‘খালটি দ্রুত খননের জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠাবো। পাশাপাশি পানি সংরক্ষণের জন্য উপজেলার সবকটি হাওর-বিল খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’