তিনি বলেন, ‘যখন ক্ষমতায় ছিলাম না তখন বইমেলায় আসতাম ও অনবরত ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু এখন আমি অনেকটা বন্দী জীবন কাটাচ্ছি। আমার এখানে আসার সুযোগ নেই। যদি আমি আসতে চাই সেটা নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্যদের সমস্যার সৃষ্টি করে। মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনা করে এখানে আসার ইচ্ছা দমন করলেও বাস্তবে মনটা এখানে পড়ে থাকে।’
বাংলা একাডেমি ও পাশের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হওয়া মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এ বছর মেলার স্লোগান: ‘বিজয়: ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ এবং নবপর্যায়’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বইমেলা শুধু বই বেচাকেনার জায়গা নয়। আমরা এ বইমেলাকে বাঙালির প্রাণের মেলা মনে করি।
নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস জানানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ বিশাল ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছে।
বিশ্ব সাহিত্য জানতে এবং অন্যদের বাংলাদেশি সাহিত্য জানাতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সাহিত্যের বই অনুবাদের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, বিশ্ব সাহিত্যকে জানতে জরুরিভাবে অনুবাদ প্রয়োজন।
পৃথিবী দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং বইপত্র এখন ডিজিটাল মাধ্যমে পাওয়া গেলেও কাগুজে বইয়ের আকর্ষণ কখনও শেষ হবে না বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানোর মধ্যে যে আনন্দ তার সাথে আর কিছুর তুলনা হয় না বলে মত দেন তিনি।
তবে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে বই পাওয়ার জন্য ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় কবি শঙ্খ ঘোষ ও মিসরীয় লেখক-কবি মুহসেন আল আরিসি। তবে অসুস্থতার কারণে শঙ্খ ঘোষের বক্তব্য পাঠ করেন রামেন্দু মজুমদার।
বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৮ বিতরণ করেন। সেই সাথে তিনি ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অফ দা নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ বইয়ের দ্বিতীয় খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।