বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতা ইউএনবিকে জানান, অন্য আসনগুলোতে আগামী ৮ ডিসেম্বর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। কারণ ওই দিন মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের আপিলের ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে নির্বাচন কমিশন।
মাঝের সময়ে (৮ ডিসেম্বরের আগে) বিএনপির দুই বৃহত্তম শরিক- জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের সাথে আসন ভাগাভাগির বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে যাবে বলে আশা করেন বিএনপি নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য ইউএনবিকে বলেন, আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হলেও বেশিরভাগ আসনে আমাদের দলের অথবা জোটের বিকল্প প্রার্থী থাকায় বিষয়টি নিয়ে আমরা খুব বেশি উদ্বিগ্ন নই।
এছাড়াও দলের বেশিরভাগ প্রার্থী আপিলের মাধ্যমে তাদের প্রার্থীতা ফিরে পাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির ওই নেতা।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রার্থীতা বাতিল করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে আগে থেকেই বেশিরভাগ আসনে বিকল্প প্রার্থী রাখা হয়েছিল।
এছাড়াও আমরা এটাও জানাতাম যে আমাদের চেয়ারপার্সন এবং আমানুল্লাহ আমানসহ আরোও অনেক নেতাকে নির্বাচন করতে পারবে না, যোগ করেন তিনি।
স্থায়ী কমিটির এ নেতা বলেন, আমাদের কাছে এখন উদ্বেগের ব্যাপার হলো সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের প্রচারণায় নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ নিয়ে। কারণ দলীয় নেতকর্মীরা পুলিশি হয়রানির ভয়ে ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকায় ফিরতে পারছে না।
বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য জহিরুদ্দিন স্বপন গত সোমবার তার নির্বাচনীয় এলাকায় নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশন বরাবর চিঠি দিয়েছেন। এছাড়াও বিএনপির আরও অনেক প্রার্থী নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থানীয় প্রশাসনে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যোগ দিলেও দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
বিএনপি প্রার্থীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির পাশাপাশি তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে মনোনয়ন বাতিল করা হচ্ছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ব্যাপারে কোনো খুঁত খুঁজে পাচ্ছেন না।
সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা দিনদিন সঙ্কুচিত হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার তাদের এমন মনোভাব পরিবর্তন না হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি নেতা ফখরুল জানান, আগামী এক/দুই দিনের মধ্যে দুই জোটের সাথে আসন বণ্টনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
স্থায়ী কমিটির অপর এক সদস্য ইউএনবিকে বলেন, সামনে যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চুড়ান্ত হওয়া প্রায় ২০০ জন প্রার্থীর তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত পুনঃতফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মোট ৩০৬৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে ২৯৫ আসনে বিএনপির ৬৯৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন।