রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার তামিম ইকবাল ছাড়াও ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মাদ নাঈম ও সৌম্য সরকার। এক মাস পর দ্বিতীয় ডোজ নেবেন তারা।
টিকা নেয়ার পর সাংবাদিকদের তামিম ইকবাল বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিতে টিকা নেয়া খুবই জরুরি।
‘ভ্যাকসিন নেয়া আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই,’ বলেন তিনি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট ম্যাচে অংশ নেয়। ওয়ানডেতে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করা টাইগাররা টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়।
আগামী মাসে বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী সকল ক্রিকেটারকে টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
‘ভ্যাকসিন গ্রহণের অভিজ্ঞতা খুব ভালো। আমি যতদূর জানি, আমার পরিবারের সদস্যরা এবং বন্ধুরা যারা নিবন্ধনের পরে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারাও ভালো সেবা পেয়েছেন। প্রক্রিয়াটি সত্যিই সহজ এবং কার্যকর,’ বলেন তামিম।
আরও পড়ুন: আইপিএল: সাকিবকে নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, জিতল কেকেআর, মুস্তাফিজ রাজস্থানে
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জাতীয় দলের অন্যান্য সদস্যরা আগামী কয়েকদিন এই টিকা গ্রহণ করবেন। তাদের পাশাপাশি কোচিং স্টাফদেরও শিগগিরই টিকা দেয়া হবে।
দেশব্যাপী চলমান টিকাদান কর্মসূচিতে গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনার টিকা নিয়েছেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৬ জন এবং নারী ৯৭ হাজার নয়জন।
২৪ ঘণ্টায় দেশে টিকা নিয়েছেন আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার বলা হয়েছে, দেশের এক হাজার ৪০০ টিকাদান কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন ৩ লাখ ৬০ হাজার টিকা দানের সক্ষমতা রয়েছে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সারা দেশে করোনার টিকা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৩ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৫ জন এবং নারী ছয় লাখ ১৪ হাজার ৬৫৮ জন।
এদিকে, রাজধানী ঢাকার ৪৬টি টিকাদান কেন্দ্রে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩২ হাজার ৪১২ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত মোট দুই লাখ ৪৫ হাজার ৮২৮ জনকে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৬৪ হাজার ৯৬০ জন পুরুষ এবং ৮০ হাজার ৮৬৮ জন নারী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি: দেশে মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে
এর আগে, মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ব্যাপকভাবে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
দেশে করোনা পরিস্থিতি
দেশে ২৪ ঘণ্টায় প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে বলে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে আট হাজার ৩২৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯১ জনের শরীরে নতুন করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪২ হাজার ২৬৮ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে বুধবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ১৬ জনের মৃত্যু এবং ৪৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: দেশে করোনার টিকার অভাব নেই, ভবিষ্যতেও হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রতিদিন অন্তত ২ লাখ মানুষ টিকা গ্রহণ করছেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
যাদু বা ম্যাজিক দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ হয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৭৪২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪ হাজার ৬০৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৩৯ লাখ ৮ হাজার ২৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২.৬৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৬৭৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৮৯ হাজার ৯৩২ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর কথা জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।