তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে কিউইদের ৭২ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে অজিরা।
শেষ পর্যন্ত ১৭ ওভারে ১০২ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অ্যাডাম জাম্পা নেন ৩৪ রানে ৪টি উইকেট।
বিশ্বের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের পর অজিরা আরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে জুনে ক্যারিবিয়ান ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দিকে যাবে।
তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে শেষ বলে চার মেরে ৬ উইকেটে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া। রবিবার ইডেন পার্কে দুই দলের তৃতীয় ম্যাচ।
অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মিচেল মার্শ বলেছেন, ‘এটা দারুণ এক জয়। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছিল এবং আমরা ভেবেছিলাম আমাদের ৫০ রান কম হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমাদের বোলাররা যেভাবে বেরিয়ে এসে পারফর্ম করেছে তা অসাধারণ। গত ১২ মাসে আমাদের সব দলই অনেক কোণঠাসা হয়ে পড়েছে এবং আমরা তাদের থেকে বেরিয়ে আসার উপায় খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছি। আজকের রাতটি তারই আরেকটি উদাহরণ।’
ছয় ওভারের পাওয়ার প্লে শেষে ৭২ রানে ১ উইকেট হওয়ার পর ১৯ দশমিক ৫ ওভারে ১৭৪ রানে অলআউট হয়ে গেলে মনে হচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া প্রতিযোগিতামূলক স্কোর থেকে পিছিয়ে পড়ছে।
আরও পড়ুন: রিদম গ্রুপের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ট্রাভিস হেড ২২ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে অস্ট্রেলিয়াকে দ্রুত শুরু এনে দেন। কিন্তু লকি ফার্গুসন ৪/১২ ও বেন সিয়ার্স ২-২৯ লাভ করায় নিউজিল্যান্ডের পেসাররা পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ধারাবাহিক পতন ঘটায়।
শেষ ৯ দশমিক ৫ ওভারে ৫৯ রানে ৬ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
খেলা শুরুর ঠিক আগে হাঁটুতে সামান্য আঘাত পেয়ে রাচিন রবীন্দ্রকে হারায় এবং ডেভন কনওয়ে বুড়ো আঙুলে আঘাত পেয়ে এক্স-রে করার জন্য হাসপাতালে চলে যান। এরপর নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং দুর্বল হযে পড়ে। তিনি যখন দেখেন সেখানে কোনো ফ্র্যাকচার নেই তিনি মাঠে ফিরে আসেন।
কনওয়ে তখনও ব্যাট করতে অক্ষম ছিলেন এবং তার উদ্বোধনী অংশীদার ফিন অ্যালেনকে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো গ্লাভস নিতে হয়েছিল।
ইনজুরি যাই থাকুক না কেন, ফাস্ট ও বাউন্সি উইকেটে অসাধারণ অস্ট্রেলিয়ান ফাস্ট বোলিংয়ের সামনে বিপর্যস্ত পড়ে নিউজিল্যান্ড।
প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ বলে আউট হন অ্যালেন, জশ হ্যাজেলউডের গুড লেংথ বল নিজের স্টাম্পে লেগে যায়।
উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েডের দুর্দান্ত ক্যাচ দিয়ে আউট হন উইল ইয়ং (৫)। ইয়ং প্যাট কামিন্সের একটি বল টপ-এজ করেছিলেন যা তিনি পুল করার চেষ্টা করেছিলেন এবং ওয়েড বৃত্তের প্রান্তে একটি ক্যাচ নিয়েছিলেন ফাইন লেগের দিকে দৌড়ে।
নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার নিজেকে অর্ডারে সাত নম্বরে থেকে তিন নম্বরে উন্নীত করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বিসিবির নারী বিভাগের নতুন প্রধান হাবিবুল বাশার
মার্ক চ্যাপম্যানও একটি শর্ট বলে পড়েছিলেন, মার্শের একটি বল স্ল্যাশ করেছিলেন যা মিড অনে টিম ডেভিডের হাতে ধরা পড়েছিল। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ২৯-৪, সিরিজ বাঁচানোর আশা শেষ হয়ে যায়।
পঞ্চম উইকেটে গ্লেন ফিলিপস ও জশ ক্লার্কসন ৪৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ১০ রান করে অ্যাডাম জাম্পার বলে বোল্ড হন ক্ল্যাকসন এবং পরের বলেই অ্যাডাম মিলনে একই কায়দায় আউট হন। নিউজিল্যান্ডের স্কোর ৭৪-৬।
ট্রেন্ট বোল্টের করা ম্যাচের প্রথম ওভারে দুটি ছক্কাসহ ২০ রান করে অস্ট্রেলিয়ান অর্ডারের শীর্ষে ছিলেন হেড।
বোল্টকে ২০২২ সালের নভেম্বরের পর তার প্রথম টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য নিউজিল্যান্ড দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল এবং বিশ্বকাপের জন্য ব্ল্যাক ক্যাপস দলে জায়গা পাওয়ার আশা করেছিলেন। তবে তার চার ওভার ৪৯ রান দেওয়ায় তার নির্বাচনের সম্ভাবনা ম্লান হয়ে গেছে। বোল্ট এখন আর নিউজিল্যান্ডের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় নন, বিশ্বের বিভিন্ন টি-টোয়েন্টি লিগে খেলেন।
ওয়েলিংটনে প্রথম ম্যাচে খেলা ডেভিড ওয়ার্নারের পরিবর্তে হেডের সঙ্গে ওপেন করার জন্য স্টিভ স্মিথের নাম ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। ওয়েড এসেছিলেন ম্যাট শর্টের পরিবর্তে এবং এলিস মিচেল স্টার্কের পরিবর্তে।
তৃতীয় ওভারে স্মিথ ১১ রানে আউট হলেও হেডের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স অস্ট্রেলিয়াকে ২৪ বলে ৫০ রানে নিয়ে যায়।
অবশেষে সপ্তম ওভারে হেড আউট হন যখন মোট স্কোর ৮৫-২। এরপর থেকে অস্ট্রেলীয় ব্যাটিং দুর্বল হয় কারন ফার্গুসন কিছু অসাধারণ ফাস্ট বোলিং উপহার দেন।
সিয়ার্স এবং অ্যাডাম মিলনের সহায়তা তিনি ২/৪০ স্কোর করেন। নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন এই খেলোয়াড়রা।
স্যান্টনারের হাতে পড়ার আগে ২১ বলে ২৬ রান করেন মার্শ এবং মিলনের বলে ফার্গুসনের হাতে ধরা পড়ার আগে কামিন্স ২২ বলে মূল্যবান ২৮ রান করেন।