তারকায় ভরা ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের নারীরা তাদের প্রথম ওয়ানডে সিরিজ ড্র করেছে। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সমতায় ফেরে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল। তবে শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করাটাও বাংলাদেশের গর্ব।
তবে ম্যাচ শেষে এই সিরিজে আম্পায়ারিং নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন ভারতীয় অধিনায়ক হরমনপ্রীত কৌর।
তিনি বলেন, ‘এই ম্যাচ থেকে অনেক কিছু শিখলাম। ক্রিকেট ছাড়াও, যে ধরনের আম্পায়ারিং হয়েছে তাতে আমরা অবাক। ’
তিনি আরও বলেন, ‘পরের বার বাংলাদেশে আসার সময় এই ধরনের আম্পায়ারিংয়ের মোকাবিলা করার জন্যে তৈরি থাকতে হবে। সেই মতো আমাদের প্রস্তুত হতে হবে।’
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ওপেনার শামীমা সুলতানার হাফ সেঞ্চুরির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ দারুণ একটা শুরু করে।
তবে ফারজানা হক পিংকির অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে বড় সংগ্রহ পেয় বাংলাদেশ নারী দল। ১৬০ বলে ১০৭ রান করেন ফারজানা। এরফলে নারী ওয়ানডেতে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েন তিনি।
ফারজানা তার ইনিংসে সাতটি বাউন্ডারি মেরেছিলেন এবং এককভাবে বাংলাদেশের ইনিংসকে ধরে রেখেছিলেন। কারণ অন্য প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়েছিল।
শেষ পর্যন্ত ফারজানার বীরত্বে বাংলাদেশ তাদের নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান করতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশের দেয়া ২২৫ রানের জবাবে ভারত নারী ক্রিকেট দল ৪৯.৩ ওভারে ১০ উইকেটে ২২৫ রান সংগ্রহ করে। ফলে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজও টাই হলো।
ভারতের পক্ষে বোলারদের মধ্যে স্নেহ রানা ৪৫ রানে দুই উইকেট নেন এবং অন্য উইকেট নেন দেবিকা বৈদ্য।
আরও পড়ুন: নারী ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা প্রথম বাংলাদেশি ফারজানা
জয়ের জন্য ২২৬ রান তাড়া করে দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার শেফালি বর্মাকে হারিয়ে ভারতের শুরুটা খারাপ হয়েছিল। ইয়াস্তিকা ভাটিয়াও দ্রুতই পড়ে যান, ফলে ৩২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ভারতকে বেশ বিপাকেই পড়তে হয়।
তবে হারলিন দেওল ও স্মৃতি মান্দানা ইনিংস টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে তোলেন। তৃতীয় উইকেটে তারা ১০৭ রান যোগ করেন।
দেওল ১০৮ ডেলিভারিতে ৭৭ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তিনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। প্রথমে মান্দানার সঙ্গে এবং তারপর জেমিমাহ রড্রিগেজের সঙ্গে। মন্দনা ৮৫ বলে ৫৯ রান করেন এবং জেমিমা ৪৫ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন।
তবে ভারত ফের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে উইকেট হারায়। দেওলও ৪২তম ওভারে রান আউট হয়ে যায়।
এক ওভার বাকি থাকতে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ৩ রান। তবে, বাংলাদেশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে এবং খেলাটি টাই করতে সক্ষম হয়। ভারত ৪৯.৩ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২২৫ রান করে।
মারুফা শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে দুই রান দেন এবং তৃতীয় বলে তিনি মেঘনা সিং-এর উইকেট তুলে নেন। মাত্র ৩৪ রানে শেষ পাঁচ উইকেট হারিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশের পক্ষে নাহিদা আক্তার ৩টি ও মারুফা আক্তার ২টি এবং ফাহিমা খাতুন ও সুলতানা খাতুন একটি করে উইকেট নেন।
বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা বলেছেন, ‘আমরা এই মুহূর্তটি উদযাপনের জন্য উন্মুখ।
এই রোমাঞ্চকর টাই নিয়ে সিরিজে সমতা আনে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে টাইগ্রেসরা জিতেছিল, কিন্তু ভারত দ্বিতীয় ম্যাচে বাউন্স ব্যাক করে।
আরও পড়ুন: তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী দলের জয়