এতে করে নদীতে অবৈধ জাল পেতে মা মাছ নিধন, ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচলে নজরদারি, বালু উত্তোলন বন্ধসহ ও ডলফিন রক্ষায় সার্বিক নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার হবে।
নদী নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা পুলিশের একটি ইউনিট এই ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে নজরদারি চালাবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে হালদা নদীর জীব বৈচিত্র রক্ষা আরও জোরদার হবে। এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’
আরও পড়ুন: হাইকোর্টে অনলাইনে বিচার শুরু, হালদা নদীর ডলফিন রক্ষার নির্দেশ
তিনি বলেন, ‘এখন তো আমাদের ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী ম্যানুয়ালি হালদা নদীর মা মাছ পাহারা বা সুরক্ষায় কাজ করছে। কিন্তু এত বড় একটি নদীকে এত কম মানুষ দিয়ে পাহারা দেয়া সম্ভব না। এই জন্য আমরা অনেকদিন ধরেই সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা বলে আসছিলাম।’
অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘এই ক্যামেরাগুলো বসানোর ফলে কয়েকটা সুবিধা পাওয়া যাবে। যেকোনো স্থান থেকে নদী নজরদারি করা যাবে, রাতেও নদীতে কেউ জাল বসাচ্ছে কিনা, বালি উত্তোলন বা ডলফিন হত্যা করছে কিনা, অবৈধ কিছু করা হচ্ছে কিনা, সেটা বোঝা যাবে। সেই সাথে যারা অবৈধ মাছ ধরে বা বালু উত্তোলন করে, তাদের মধ্যেও একটা ভীতির তৈরি হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ড্রেজারের আঘাতে মা মাছের মৃত্যু
সংশ্লিষ্টরা জানান, হালদা নদী বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র, যাকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ বলে ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার। এপ্রিল মাসেই এখানে মাছের প্রজনন মৌসুম রয়েছে। তার আগেই হালদা নদীর প্রাকৃতিক প্রজনন বৈচিত্র্য রক্ষায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারির এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মিজানুর রহমান জানান, হালদার জীব বৈচিত্র রক্ষায় নদীতে আটটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ক্যামেরা বসনো হয়েছে। এ ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব পয়েন্ট ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিপর্যস্ত হালদা নদী রক্ষায় ১১ সুপারিশ
জানা গেছে, দেশের একমাত্র কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী নানান দূষণে কবলিত। এছাড়া মা মাছ নিধন, ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচল, বালু উত্তোলন মানব সৃষ্ট নানান কারণে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে নদীটি। দুষণের কবলে পড়ে হালদার অনেক প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এছাড়া বিলুপ্তি পথে গাঙ্গেয় ডলফিন।