আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো। আগামী পাঁচ বছর নতুন সরকারের সঙ্গে আরও নতুন নতুন বিষয় নিয়ে সম্ভাবনার দ্বারগুলো উন্মোচিত হবে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ প্রত্যাশার কথা জানান।
আরও পড়ুন: পণ্যের দাম বেশি হলে ৩৩৩ নম্বরে অভিযোগ জানাতে পারবেন: পলক
নির্বাচনের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আশঙ্কা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ‘নতুন মন্ত্রিসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে একজন রাষ্ট্রদূত দেখা করলেন এবং ব্যবসা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি-উদ্ভাবন এগুলো নিয়ে আলোচনা করলেন। এরমধ্যে দিয়ে নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো রয়েছে।’
পলক আরও বলেন, ‘আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে সেটিই মনে হয়েছে যে, বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বের অন্য দেশগুলো খুব আগ্রহী। আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বিভিন্ন কথা ও আলোচনার বিষয়বস্তু থেকে আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার ভবিষ্যতে যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও সম্ভাবনার সম্পর্ক, এটা আরও বেশি সম্প্রসারণ হবে, আরও ঘনিষ্ঠ হবে।’
আরও পড়ুন: টেলিকম খাতকে লাভজনক অবস্থায় উত্তরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে: পলক
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছি। সেখানে আমেরিকার বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে এবং আমরা একসঙ্গে কাজ করব। দুই দেশের জনগণের জন্য, সারা বিশ্বের জন্য। আমার কাছে আজকের বৈঠক থেকে এটাই মনে হয়েছে।
পলক বলেন, আমাদের আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল তিনটি। আমেরিকা আমাদের সফটওয়্যার ও ফ্রিল্যান্সারদের আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় গন্তব্য। যে ৬০টি দেশে আমরা সফটওয়্যার রপ্তানি করি, আমেরিকায় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়। আমেরিকায় আমাদের আউটসোর্সিংয়ের ক্লায়েন্ট (গ্রাহক) অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশি। কীভাবে এটা আরও বাড়াতে পারি, সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন: চতুর্থবারের মতো বিজয়ী পলক
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসোর্স ইনোভেশন সেন্টার স্থাপন করার বিষয়েও কথা হয়েছে। মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও সরকার তাতে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাংলাদেশের ডাক বিভাগের সঙ্গে আমেরিকার কীভাবে জি-টু-জি সহযোগিতা হতে পারে এবং আমেরিকার যে কোম্পানিগুলো আছে, বিশেষ করে অ্যামাজন, স্টারলিংক, স্পেসএক্স, গুগল ও ফেসবুকের বিনিয়োগ কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি হতে পারে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছি।
পলক বলেন, সব মিলিয়ে বলতে পারি, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী ধরনের সহযোগিতা পেতে পারি এবং একসঙ্গে কীভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি, রপ্তানি ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে আমরা কথা বলেছি।
আরও পড়ুন: স্মার্ট জীবনযাত্রার জন্য নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও ডাকসেবা অপরিহার্য: পলক
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমেরিকার প্রচুর বিনিয়োগ রয়েছে। গত পাঁচ বছরে এ খাতে ২৮ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। আবার বাংলাদেশে এখন ওরাকল, মাইক্রোসফটসহ বেশ কিছু আইটি কোম্পানি কাজ করছে। আরও অনেক কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আকর্ষণ করতে চাই। সর্বশেষ সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় প্রয়োজন, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে।