অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি বাংলাদেশের আমদানিনির্ভর অর্থনীতির ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সার, জ্বালানি ও গ্যাসের দাম অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনার জন্য বরাদ্দ জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশে উন্নীত করতে হয়েছিল।
২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে, যেখানে যুদ্ধপূর্ব বছরগুলোতে ভর্তুকি ও প্রণোদনার জন্য বরাদ্দ গড়ে জিডিপির ১ শতাংশে সীমাবদ্ধ ছিল।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি মুদ্রাস্ফীতি, সরকারি ব্যয়, পরিশোধের ভারসাম্য, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং বিনিময় হারে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে।
যুদ্ধ এবং যুদ্ধকেন্দ্রিক নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন ব্যাহত হয়েছিল। সে সময় বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্য, সার ও জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলো; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, নজিরবিহীন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে ধীরে ধীরে পলিসি ইন্টারেস্ট রেট বাড়িয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিবেশের এই পরিবর্তনগুলো আমাদের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করছে। এটা লক্ষণীয় যে, যুদ্ধপূর্ব দশকে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।’
তিনি বলেন, যুদ্ধোত্তর বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার হারের অবমূল্যায়নের ফলে ২০২২ সালের আগস্টে গড় মুদ্রাস্ফীতি ৯ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হয়।
আরও পড়ুন: বাজেট অবাস্তব, এভাবে মূল্যস্ফীতি রোধ করা সম্ভব নয়: সিপিডি
ফলে চলতি অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে রাখা সম্ভব হবে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের জুনে ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০২২ সালের জুনে ৪১ দমমিক ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে আসে এবং ধীরে ধীরে বর্তমানে এটি ২৯ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে।
একই সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে। ২০২২ সালের জুনে, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার ছিল প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ৫ পয়সা।
২০২৩ সালের ২৪ মে বিনিময় হার মার্কিন ডলার প্রতি ১০৮ টাকা ১ পয়সা ছিল। বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রার হার স্থিতিশীল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাথমিক প্রচেষ্টার ফলে বাজারে সাময়িক তারল্য সংকট দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: 'স্মার্ট বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলার, দারিদ্র্যসীমার ৩ শতাংশের কম হবে'