তিনি বলেন, ‘পায়রা বন্দর নির্মাণে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’
পটুয়াখালীতে পায়রা বন্দর নির্মাণে ভূমি ক্ষতিগ্রস্থদের আবাসন নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতুর সমালোচনাকারী ইউনুস ও খালেদা এখন কোথায়, প্রশ্ন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পায়রা বন্দর পুনর্বাসনের তথ্য উল্লেখ করে বলেন, ‘পায়রা বন্দর নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ৪৮৪ একর ভূমিতে ১৪টি প্যাকেজে মোট ৭টি কেন্দ্রে ক্ষতিগ্রস্থ সকল পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য প্রায় ৩,৪২৩টি বাড়ি নির্মাণাধীন রয়েছে। যার মধ্যে এ-টাইপ (৪ কাঠা জায়গার উপর ৯৭৮ বর্গফুটের বিল্ডিং) ১১৬৫টি এবং বি-টাইপ (৩ কাঠা জায়গার উপর ৮৮৫ বর্গফুটের বিল্ডিং) ২২৫৮টি। ১৪টি প্যাকেজের মোট চুক্তি মূল্য ১ লাখ ৪২ হাজার ৫৪ কোটি টাকা। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারসমূহকে পুনর্বাসনের নিমিত্ত পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো/সুবিধাদির উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৪টি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হবে।’
আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
‘পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ও এর সংযোগ সড়ক এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদেরকে প্যাকেজ-১ এর বাড়িগুলোতে বিধি মোতাবেক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল ও এর সংযোগ সড়ক সংলগ্ন লালুয়া ইউনিয়নভূক্ত অধিগ্রহণকৃত এলাকার ১১৪টি পরিবারকে ‘পুনর্বাসন নির্দেশিকার’ আলোকে পুনর্বাসিত করা হবে।’
আরও পড়ুন: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর ৩ জেলার নৌপথ পরিদর্শন
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পুনর্বাসন প্যাকেজসমূহের মধ্যে প্যাকেজ-১ এর কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এখানে মোট ১১৪টি বাড়ি রয়েছে; যার মধ্যে এ-টাইপবাড়ি ৩৬টি ও বি-টাইপবাড়ি ৭৮টি। প্রতিটি বাড়িতে রয়েছে ৩টি বেডরুম, ২টি বাথরুম, কিচেন ও বারান্দা; যার মধ্যে এটাচড বাথরুমসহ একটি মাস্টার বেডরুম আছে। প্রতি চারটি বাড়ির জন্য একটি সেপটিক ট্যাংক (উভয়টি ৫০ জন ব্যবহারকারীর ধারণক্ষমতা সম্পন্ন) রয়েছে এবং প্রতিটি বাড়িতে ওভারহেড ওয়াটার ট্যাংকের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও রাস্তা, স্কুল, মসজিদ, বিদ্যুৎ, খেলার মাঠ, পরিবেশবান্ধব সামাজিক বনায়ন ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধাদি রয়েছে।’
অঅরও পড়ুন: মুজিববর্ষে কোটি চারা রোপণে দেশে সবুজ বিপ্লব হবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
পায়রা বন্দর নির্মাণের জন্য মোট ৬৫৬২ দশমিক ২৭ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান রয়েছে। উক্ত কাজ সম্পাদনের ফলে প্রায় ৩৪২৩ টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হবে । বর্তমানে ২৩৫০টি বাড়ির নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে; তার মধ্যে ২০২৫টি বাড়ির ছাঁদ ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্কুল কাম কমিউনিটি ক্লিনিক, মসজিদ, বিদ্যুৎ সংযোগ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, ড্রেনেজ সিস্টেম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, পুকুর, মার্কেট, পরিবেশ বান্ধব সামাজিক বনায়নসহ অন্যান্য সকল সুবিধাদি থাকবে।
আরও পড়ুন; ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক সুস্থ ও সবল: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের পুনর্বাসিত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ৪,২০০ জনকে ২২টি ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৬টি ট্রেডে ১০৪টি ব্যাচে মোট ২৬০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। যারা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে ১৯৭৫ জন বিভিন্ন ট্রেডের উপর আয় বৃদ্ধিমূলক কাজের সাথে ইতিমধ্যে যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে ১২টি ট্রেডের উপর ৩৪টি ব্যাচে আরো ৮৫০ জনের প্রশিক্ষণ প্রদান করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ব্যাচে ৩৫০ জনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। ট্রেডগুলো হলো- বেসিক কম্পিউটার, ওয়েলডিং, মেকানিকেল ওয়ার্কশপ/লেদমেশিন, মোবাইল সার্ভিসিং ও রিপেয়ারিং উল্লেখযোগ্য। উক্ত প্রশিক্ষণের ফলে ইতোমধ্যে স্থানীয় জনগণের উপার্জন বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রয়োজন ছাড়া লঞ্চে ঈদযাত্রা পরিহারে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর আহ্বান
শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এসময় প্রতিমন্ত্রীর সাথে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুন কল্লোল, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার এম রাফিউল হাসান, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর এম মামুনুর রশীদ, সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) কমডোর রাজীব ত্রিপুরা এবং প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন মুনীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন।