হাইকোর্ট বলেছেন, এত টাকা লাগলে সাধারণ মানুষ কীভাবে হজে যাবে? এত টাকার প্যাকেজ নির্ধারণ তো অমানবিক। বিশ্বের অন্যান্য দেশে হজের জন্য সরকার আলাদা বরাদ্দ রাখে, আমাদের এটি নেই কেন?
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের খরচ কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ বিষয়ে করা এক রিটের শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব মন্তব্য করেন।
আদালত পরবর্তী শুনানির জন্য বুধবার দিন রেখেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আশরাফ-উজ-জামান নিজেই শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আওলাদ হোসেন।
পরে আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘আদালত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে হজ প্যাকেজের সর্বশেষ অবস্থা আমাকে জানাতে বলেছেন। এরপর বুধবার রিটের ওপর পরবর্তী শুনানি হবে।’
আরও পড়ুন: বেসরকারি হজ প্যাকেজে ন্যূনতম খরচ ৬.৭২ লাখ টাকা: হাব
হাইকোর্ট আরও বলেছেন যে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার হজ ফান্ড আছে। বাংলাদেশ ও ভারতের ফান্ড কম। একমাত্র বঙ্গবন্ধু এ বিষয়ে চিন্তা করেছিলেন। তারপর এ বিষয়ে কেউ চিন্তা করেননি।
সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাইরে অন্য যে কোনো এয়ারলাইন্সের টিকিট ক্রয় করার সুবিধা না থাকার বিষয়ে আদালত বলেন, এখানে ব্যবসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক স্মারকে হজ প্যাকেজ (২০২৩ সাল) ঘোষণা করে। হজ প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ছয় লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীর এই খরচ কমিয়ে চার লাখ টাকার মধ্যে পুনর্নির্ধারণ করতে অনুরোধ জানিয়ে ৬ মার্চ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আশরাফ-উজ-জামান।
নোটিশে ওই স্মারক সংশোধন বা পরিবর্তন করে চার লাখ টাকার মধ্যে হজ প্যাকেজ (২০২৩ সাল) সাত দিনের মধ্যে পুনর্নির্ধারণ করতে অনুরোধ জানানো হয়। এতে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এতে ফল না পেয়ে ১২ মার্চ রিটটি করেন।
আরও পড়ুন: সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজের খরচ নির্ধারণ
আইনজীবী আশরাফ উজ জামান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে প্লেন ভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজ যাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজ যাত্রীদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়। এসব কারণসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে চার লাখ টাকার মধ্যে হজ প্যাকেজ-২০২৩ সংশোধন, পরিবর্তন এবং পুনর্নির্ধারণ করতে আইনী নোটিশে অনুরোধ করা হয়।
পরে নোটিশের জবাব না পেয়ে গত ১২ মার্চ আইনজীবী আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। রিটে ধর্ম সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।
আরও পড়ুন: হজযাত্রীদের ডলার সংকট এড়াতে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে: ধর্মপ্রতিমন্ত্রী