পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিশ্ব নেতাদের বলেছেন, এসডিজি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে বিশাল ফাঁক রয়েছে এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য দোহা কর্মসূচির আওতায় প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দুই দিনব্যাপী এসডিজি শীর্ষ সম্মেলনের অংশ হিসেবে গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সমন্বিত প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের জন্য দুর্ভিক্ষ এখন অতীতের বিষয়।
মন্ত্রী বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। সবার বা 'সমগ্র সমাজের' অংশগ্রহণে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে বাংলাদেশ।’
আরও পড়ুন: ‘বন্ধু পরামর্শ দিতে পারে’: মোমেন
এসডিজিকে বর্তমান সময়ের 'ম্যাগনা কার্টা' আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নিরসনে নানামুখী প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আমরা দুর্ভিক্ষকে অতীতের বিষয় বানিয়েছি।’
তিনি স্মরণ করেন, ২০২২ সালে দেশে চরম দারিদ্র্য হ্রাস পেয়ে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ২০০৬ সালে ২৫ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।
মোমেন বলেন, ‘তবে এসডিজি বাস্তবায়নে বৈশ্বিক অংশীদারিত্বে বিশাল ফাঁক রয়েছে। আমরা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য দোহা কর্মসূচির আওতায় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন চাই।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি নিয়মভিত্তিক বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থা চায়।
মন্ত্রী রেয়াতি ঋণ এবং জীবন রক্ষাকারী প্রযুক্তির জন্য ন্যূনতম শর্ত আরোপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এসডিজি বাস্তবায়নে সরকারি খাতের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে পর্যাপ্ত প্রণোদনা দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
এদিকে, শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা এসডিজির বেশিরভাগ লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি খুব ধীর গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০৩০ সালের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সেট উদ্ধারে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে বিশ্ব যে বিপদের সম্মুখীন হবে সে সম্পর্কে সতর্ক করেছেন।
তারা ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ ত্বরান্বিত করার জন্য একটি রাজনৈতিক ঘোষণাও গ্রহণ করেছে।
সশস্ত্র সংঘাত, প্রতিকূল জলবায়ু প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারির দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবসহ বৈশ্বিক সংকট ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য হুমকি স্বরূপ, এমন এক সংকটময় সময়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সমবেত রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের দ্বারা ১০ পৃষ্ঠার এই নথিটি গৃহীত হয়েছে।
২০২৩ সালের এসডিজি শীর্ষ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের ৭৮তম অধিবেশন শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: গায়ানার পক্ষে আইসিজে রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ: মোমেন