করোনাভাইরাস সংক্রমণের দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন মোকাবিলায় বুস্টার ডোজ সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী ওমিক্রনের আতঙ্ক কাজ করছে। বুস্টার ডোজে ওমিক্রন অনেকটাই প্রতিরোধ হয় বলে জানা গেছে। আর এখন যেহেতু সরকারের হাতে পর্যাপ্ত ভ্যাক্সিন মজুদও আছে, সেকারণে আমরা এখন থেকেই বুস্টার ডোজ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) মহাখালী বিসিপিএস মিলনায়তনে বুস্টার ডোজের উদ্বোধনের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, আগে যেকোনো ডোজ নেয়া ব্যক্তিরাই বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার টিকা নিতে পারবেন। এই ডোজ প্রথমে ষাটোর্ধ্ব বয়স্ক ব্যক্তি, কো-মর্বিডিটি আছে এমন ব্যক্তি এবং সেই সঙ্গে সকল ফ্রন্ট লাইনারদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: মহাখালী বিসিপিএসএ থেকে বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে এই মুহুর্তে টিকার কোন সংকট নেই। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়ার যে পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে সে লক্ষ্য পূরণে আমাদের কাজ সঠিকভাবেই চলছে। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষের জন্য হিসেব করলে ১২ কোটির কাছাকাছি মানুষকে আসছে বছরের এপ্রিলের মধ্যে টিকার আওতায় আনতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই দুই ডোজ মিলে প্রায় ১১ কোটির বেশি মানুষকে ভ্যাক্সিনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন হাতে ভ্যাক্সিন আছে চার কোটি ৬৩ লাখের মতো ডোজ ভ্যাক্সিন। এ মাসে আরও দুই কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন আসবে। নতুন বছরের শুরুর দিকে আরও ৯ কোটি ডোজ ভ্যাক্সিন হাতে চলে আসবে। সুতরাং নতুন বছরের এপ্রিলের মধ্যেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হবে বলে আশা রাখা যায়।
মন্ত্রী বলেন, ভ্যাক্সিন ডোজে দেশের সফলতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে। এখন অনেকের আগে বুস্টার ডোজের মাধ্যমে দেশে সুরক্ষা আরও মজবুত করা হচ্ছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু করতে পারছি এটা আরেকটি বড় অর্জন আমাদের। এর আগে আমরা অনেক দেশের আগেই দেশে টিকা কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। ডাক্তার, নার্সসহ ফ্রন্টলাইনারদের টিকা দিতে পেরেছি।
আরও পড়ুন: করোনার বুস্টার ডোজ রবিবার শুরু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, সঠিক সময়ে টিকা দেয়ার ফলে দেশ এখন নিরাপদে আছে। মৃত্যুর সংখ্যা এক ডিজিটেই আছে। গতকাল এক শতাংশেরও নিচে এসেছে। এটি এত জনবহুল দেশে খুবই বিরল একটি বিষয়। সবার সহযোগিতায় আমরা কাজটি করে যাচ্ছি। প্রতিটি মানুষকেই যারা প্রাপ্য টিকা দেয়া হবে।কেউই টিকার আওতার বাইরে থাকবে না।
অনুষ্ঠানে সবার আগে বুস্টার ডোজের টিকা নেন দেশে প্রথম টিকা নেয়া কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। এরপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী এডভোকেট আনিসুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্প মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং জাতিয় অধ্যাপক প্রফেসর ডা. শায়লা খাতুন বুস্টার ডোজ টিকা নেন।
সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করা প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, বুস্টার ডোজ সংক্রান্ত সুরক্ষা অ্যাপের আপডেট কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। তবে এই মুহূর্তে টিকা কার্ডের মাধ্যমে চলবে। একইসঙ্গে স্বাভাবিক টিকা কার্যক্রমও চলমান থাকবে।
আরও পড়ুন: ১০ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী