কক্সবাজারে ৫০০ বেডের হাসপাতাল করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেছেন, ‘কক্সবাজারে দেশ বিদেশ থেকে প্রতি বছরই লাখ লাখ পর্যটক আসেন। এর সঙ্গে কক্সবাজারে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাস করছে। এখানে প্রায় ২৮ লাখ স্থানীয় বাসিন্দা আছেন। প্রতিদিনই এখানকার সরকারি হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে অনেক রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে, কক্সবাজারে চিকিৎসা সেবা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি।
আরও পড়ুন: ষাটোর্ধ্বদের করোনা টিকার ৪র্থ ডোজ দেয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারের বর্তমানে আড়াইশ’ বেডের জেলা সদর সরকারি হাসপাতাল থাকলেও সেখানে ছয় থেকে সাতশ’ রোগী প্রতিদিনই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এত রোগীর চাপে হাসপাতালের ফ্লোরেও রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এজন্য এই হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা জরুরি। তাই, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কক্সবাজারের হাসপাতালে অচিরেই আড়াইশ’ বেড থেকে বাড়িয়ে পাঁচশ’ বেডের হাসপাতাল করা হবে। এর পাশাপাশি এই হাস্পাতালে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়ারও ব্যবস্থা করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএনএইচসিআর-এর যৌথ উদ্যোগে কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড হাসপাতালে নবনির্মিত ‘ডা. আব্দুর নূর বুলবুল ভবন’ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
কক্সবাজারের বর্তমানের আড়াইশ’ বেড হাসপাতালটি এখন তিন তলা বিল্ডিং হিসেবে এখানকার প্রায় ২৮ লাখ স্থানীয় বাসিন্দাসহ অন্যদেরও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে নতুন করে পরিত্যক্ত জায়গা পাওয়া অনেক কঠিন। তাই এই তিন তলা বিশিষ্ট হাসপাতালটিকে ১০ তলা বিশিষ্ট হাসপাতালে পরিণত করতে পারলে এখানকার পর্যটকসহ স্থানীয় ২৮ লাখ মানুষের সেবার মান বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে সভায় জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এক্ষেত্রে বিদেশি সাহায্য না পাওয়া গেলে সরকারিভাবেই এই উন্নয়ন কাজটি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ঢাকা শহরে কোনো অননুমোদিত ক্লিনিক নেই: সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মিয়ানমার থেকে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের নানারকম সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিল ১০ লাখ, এখন সেটি আরও কয়েক লাখ বেড়ে গেছে। প্রতিদিনই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের কারণে এদেশের মুল্যবান বন বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা আরও বেড়ে গেলে তা দেশের জন্য স্বস্তির হবে না বলে জানান মন্ত্রী। স্বাস্থ্যমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবেই বলে সভায় উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড সরকারি হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও কক্সবাজারের উখিয়া, রামু অঞ্চলের সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি'র সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, ইউএনএইচসিআর কক্সবাজারের হেড অব অপারেশন ইউকো আকাসাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হাসান, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা সদর ২৫০ বেড সরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোমিনুর রহমান, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ড. মাহাবুবুর রহমানসহ অন্যান্য উধ্বর্তন কর্মকর্তারা।