বগুড়ার শেরপুরে ১৪ মাস বয়সী ঘুমন্ত শিশুকে পুকুরের পানিতে ছুঁড়ে ফেলে হত্যা করেছে বাবা। সোমবার উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম হুমায়রা খাতুন। বাবা জাকির হোসেন (৪৫) ওই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্র জানায়, সাত বছর আগে জাকিরের সঙ্গে পাশ্ব^বর্তী নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের নামা সিংড়াপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে হয়।
বিয়ের এক বছরের মাথায় প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। তার নাম রাখা হয় মোছা. জান্নাতি খাতুন। বর্তমানে বয়স ৬ বছর।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে সুপারি গাছে বেঁধে শিশুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
এরপর বাবা জাকিরের প্রত্যাশা ছিল ছেলে সন্তানের। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয় সে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো।
এরই জের ধরে সোমবার সন্ধ্যায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে রাতের কোনো এক সময় ঘুমন্ত শিশুকন্যা হুমায়রাকে পুকুরে ফেলে দেয় বাবা।
নিহত শিশুটির মা রাবেয়া খাতুন বলেন, মধ্যরাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার মেয়ে খাটের ওপর নেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। সেই সঙ্গে আমার বোন ও তার স্বামীকে খবর দেই। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সন্তানকে না পেয়ে একাধিকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে চাপ দেয় সবাই। পরে মেয়েকে পুকুরে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
জাকিরের ভায়রা সাইফুল ইসলাম বলেন, জাকিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোররাতে ওই পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি করে মৃত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
এরপর জাকিরকে আটক করে থানায় খবর দেয়া হয় ।
এ ব্যাপারে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া ঘুমন্ত শিশুটিকে পুকুরে ফেলে হত্যার কথা স্বীকার করায় ঘাতক বাবা জাকিরকে আটক করা হয়েছে বলেও ওসি জানান।
এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় শিশু হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
সিরাজগঞ্জে প্রতিবন্ধী শিশু হত্যা মামলায় চাচাসহ ২ জনের যাবজ্জীবন