এবারের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) অংশগ্রহনকারী দেশগুলো এখনও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি এই সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে।
সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিয়াউল হক ইউএনবিকে বলেন, উন্নত দেশগুলো ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির কাঠামো চূড়ান্ত করার জন্য ২০২৪ সালকে নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতিসহ জলবায়ু পরিবর্তনে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে অর্থ দেয়ার প্রাথমিক ইস্যুতে আমরা একমত হতে পারিনি। কার্বন নিঃসরণ কমাতে প্রশমন কর্মসূচির পরিধি নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমি মনে করি না যে আমরা এই বছরের সম্মেলনে খুব বেশি অর্জন করব, কারণ ধনী দেশগুলো পুরনো ইস্যুতেই ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যস্ত।’
আরও পড়ুন: কপ-২৭ আলোচনায় সবুজ জলবায়ু তহবিল আদায়কে অগ্রাধিকার দেয় বাংলাদেশ: ইউএবনবিকে জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী
তিনি আরও বলেন যে কপ-২৭ এ অংশগ্রহনকারীরা বর্তমানে অভিযোজন ও ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ কর্মসূচির বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রার রূপরেখা প্রস্তুত করছে, যাতে পরবর্তী সম্মেলনে তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
জিয়াউল বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার বিষয়টি প্রতিটি সম্মেলনে ব্যাপকভাবে আলোচিত হলেও নীতিমালার অভাব থাকায় কেউ কোনও অর্থ প্রদান করে না। এজন্য আমরা অভিযোজন সংক্রান্ত বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। আশা করি পরবর্তী সম্মেলনে লক্ষ্যমাত্রা চূড়ান্ত করা হবে এবং তারপর আমরা অর্থ পাব।’
কপ-২৭ এ বিভিন্ন বাংলাদেশি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ইউএনবি জানতে পেরেছে যে গ্লাসগো-শারম আল-শেখ ওয়ার্ক প্রোগ্রাম অন মিটিগেশনের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো এই কাজের কর্মসূচির জন্য চাপ দিচ্ছে।
কোন দেশগুলোতে প্রথমে কার্বন নির্গমন পরীক্ষা করতে হবে তা এই কর্মসূচির আওতায় তালিকা করা হবে। এছাড়াও, এই কর্মসূচির আওতায় ২০৩০ সাল পর্যন্ত কী পরিমাণ কার্বন নির্গত হচ্ছে তার একটি সমন্বয় প্রতিবেদনও প্রস্তুত করা হবে।
এই বিষয়ে কপ-২৭ এ ৩৮টি অনুচ্ছেদের সমন্বয়ে একটি খসড়া নথি প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে অংশগ্রহনকারীরা একে সংক্ষিপ্ত করতে অনুচ্ছেদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছে।
সম্মেলনে কর্মকর্তা স্তরের আলোচনা শেষ হয়েছে এবং বর্তমানে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা চলছে। সম্মেলনটি শুক্রবার শেষ হলে অংশগ্রহনকারী দেশগুলোর মন্ত্রীদের অনুমোদিত চুক্তি হিসেবে ‘শারম আল-শেখ সিদ্ধান্ত’ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: কপ-২৭ সম্মেলনে লস এন্ড ড্যামেজ স্বীকৃতি পেয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজন এবারের কপ-২৭ আলোচনার মূল ফোকাস: তথ্যমন্ত্রী