রবিবার কোভিড-১৯ সময়কালীন খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি, ধানের উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনা এবং উৎপাদনে বৃদ্ধিতে ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণী এক ওয়েবিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
ওয়েবিনারে বিগত দশ বছরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ধান উৎপাদনকারী দেশগুলোর উৎপাদন চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ‘২০১০ সালে যেখানে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল চতুর্থ। বর্তমানে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল একটি অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় মাইলফলক।’
ব্রি’র জরিপ থেকে দেখা গেছে, ফলন, আবাদকৃত এলাকা, উৎপাদন ও চালের অভ্যন্তরীণ মজুদ পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের তুলনায় এ বছর সকল কৃষি অঞ্চলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এ বৃদ্ধির হার সারাদেশে গড়ে শতকরা ৮ দশমিক ৪ ভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) ৬৪ জেলার ক্রপ-কাটের ফলাফল থেকে দেখা গেছে, ধানের ফলন গড়ে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে, ব্রির ১ হাজার ৪৮টি কৃষকের মাঠে ক্রপ-কাটের ফলাফল থেকে দেখা গেছে, সারাদেশে ধানের ফলন গড়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ব্রির গবেষণায় দেখা যায়, চালের উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ দশমিক ৫৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডিএইর ক্রপ কাটের তথ্য অনুযায়ী, ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ব্রির ক্রপ কাট অনুযায়ী ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ চালের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরো মওসুমে এ বছর চালের উৎপাদন হয়েছে ২০ দশমিক ২৬ মিলিয়ন টন যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।
এই উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভালো আবহাওয়া, উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা, দাম কমানোর ফলে ডিএপি সারের ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্রি-ডিএই যৌথ উদ্যোগে ১৪টি কৃষি অঞ্চলে আঞ্চলিক কর্মশালা, বোরো মওসুমের শুরুতে কৃষক প্রশিক্ষণ এবং কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকারের তড়িৎ পদক্ষেপ সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে বলে জানানো হয়।
এ বছর বোরো ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষক আউশ চাষে ঝুঁকেছে বলে ওয়েবিনারে জানানো হয়। যে কারণে গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৮ ভাগ বেশি জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। আউশের প্রত্যাশিত উৎপাদন হবে ৩ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন টন। তবে ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ৩১টি জেলা বন্যা দ্বারা আক্রান্ত হওয়ায় আউশের প্রত্যাশিত উৎপাদন কিছুটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।