সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য চীনের তৈরি সিনোফার্ম ভ্যাকসিন প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) এক সভায় চিনের তৈরি ভ্যাকসিনটি জরুরি প্রয়োজনে প্রয়োগের জন্য অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা জানান ডিজিডিএ মহাপরিচালক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সিনোফার্মের টিকাটি চীনসহ বিভিন্ন দেশে অনুমোদিত। এই টিকার সব ডাটা আমরা পেয়েছি। সরকারিভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো আমাদের টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের দিয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করেছি।
মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের একটা পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি আছে। এই কমিটি ১২ সদস্য বিশিষ্ট। তারা এই টিকাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমরা দেখতে পেয়েছি কার্যকরী ক্ষমতা অনেক ভালো।
তিনি আরও বলেন, এক দেড় সপ্তাহের মধ্যেই উপহারের ৫ লাখ টিকা চীন থেকে পাওয়া যাবে। তারপর পর্যবেক্ষণ করে বিতরণ শুরু হবে। এরপর জি টু জি বেসিসে সরকার কেবল কিনবে।
মহাপরিচালক বলেন, দেশে টিকা উৎপাদনে সক্ষম ইনসেপটা, পপুলার এবং হেলথ কেয়ারের আছে । চীনের টিকাও উৎপাদন হতে পারে, সরকারি পর্যায়ে কথা বার্তা চলছে। তিনটির মধ্যে শুধু ইনসেপটাই মাসে ৮০ লাখ ডোজ টিকা উৎপাদন করতে সক্ষম। ফলে আমরা রপ্তানিও করতে পারব। কাঁচামাল আসলে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে উৎপাদন শরু হতে পারে আর টেকনোলজি হস্তান্তর হলে উৎপাদনে যেতে ছয় মাস সময় লাগবে।
ভারত থেকে আনা অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজের স্বল্পতা দেখা দেয়ায় গত সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে সরকার। ভারতে করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা প্রাপ্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় এই পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর কোনও দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রাশিয়া ও চীনের টিকা স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সাথে বাংলাদেশ ৩ কোটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রজেনেকার টিকা সংগ্রহের চুক্তি করেছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ মাত্র ৭০ লাখ টিকা পেয়েছে। এছাড়া ভারত ৩৩ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঠায়।
যদিও এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের কাছে পর্যাপ্ত টিকার মজুদ আছে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বর্তামনে ভারতে করোনার পরিস্থিতির চরম অবনতির কারণে পর্যাপ্ত টিকা সঠিক সময়ে পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
করোনার পরিস্থিতির অবনতির কারণে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকেই করোনার টিকা রপ্তানিকারী দেশ ভারত টিকা আমদানি করা শুরু করে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সাংবাদিকদের জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই বাংলাদেশে করোনার ২১ লাখ টিকা আসবে। এর মধ্যে বেশির ভাগ টিকাই বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এর মাধ্যমে আমদানি করবে বাংলাদেশ।
২১ লাখ টিকার মধ্যে কোভ্যাক্স সরবরাহ করবে ১ লাখ ডোজ এবং বাকি সব টিকার সেরাম ইনস্টিটিউট এর সরবরাহ করার কথা রয়েছে।