কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় অটোরিকশা চালক সুজন শিকদারকে (৩৪) হত্যার দায়ে এক আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম আসাদ (৩৪) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর দত্তপাড়া গ্রামের ইউনুচ আলীর ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম (৩১) ঝিনাইদহ জেলার কয়াগাছি মুক্তাঙ্গন আবাসন প্রকল্প এলাকার আমজাদ দফাদারের ছেলে এবং রাজু মোল্লা (২৬) ঝিনাইদহ জেলার বড় খরিখালি গ্রামের গনি মোল্লার ছেলে।
রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ আসামি রাজু এবং শরিফুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিকুল ইসলাম আসাদ এখনো পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতির বাসিন্দা সুজন তার ভাড়ায় চালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় তার ভাই আলমগীর শিকদার কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ২৯ মার্চ সকালে ভেড়ামারা থানা পুলিশ ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া এলাকার একটি লিচু বাগান থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে সুজনের ভাই আলমগীর ঘটনাস্থলে গিয়ে সুজনের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের ভাই আলমগীর বাদী হয়ে ভেড়ামারা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মহানন্দ সিং ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে মঙ্গলবার মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, মূলত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য পরিকল্পিতভাবে সুজন শিকদারের অটোরিকশা ভাড়া করে ওই আসামিরা। কিন্তু ছিনতাইকারীদের চিনে ফেলায় কৌশলে ভেড়ামারার ওই নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে তাকে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায় ছিনাতাইকারীরা।