কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জন্মের পর ফেলে রেখে যাওয়া সেই নবজাতকের দায়িত্ব নিলেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট। শনিবার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, শিশুটি বর্তমানে ওই হাসপাতালের নবজাতকদের বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে (স্ক্যানু)ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অন্যদিকে, ওই ম্যাজিস্ট্রেট বর্তমানে এসিল্যান্ড হিসেবে সিলেট বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। ১০ বছর বিবাহিত জীবনে ওই দম্পতির কোনো সন্তান হয়নি।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ ফোন: চলন্ত ট্রেন থেকে গুরুতর অসুস্থ নারীকে উদ্ধার
তিনি আরও জানান, নবজাতক ওই শিশুটির দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১৪ জন দম্পতি আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেন। আবেদনকারীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী,ব্যবসায়ী, প্রবাসী,চিকিৎসক,প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ছিলেন। আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিশুকল্যাণ বোর্ডের সভা আহ্বান করা হয়। সভায় ১৮ জন সদস্যের প্রত্যেকেই উপস্থিত ছিলেন। আবেদনগুলোর বিশ্লেষণ শেষে শিশুটির সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে শিশু আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৮ (৮৬) ধারা অনুযায়ী সর্ব সম্মতিক্রমে আবেদনকারী দম্পতিদের মধ্যে একজন দম্পতির হাতে শিশুটির দায়িত্বভার অর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেনে নবজাতকের জন্ম
জেলা প্রশাসক জানান, দু-একদিনের মধ্যেই শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দম্পতির হাতে হস্তান্তর করা হবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আরিফুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) আনম আবুজর গিফারী, এনডিসি শাহেদ আরমান, কুষ্টিয়ার সমাজসেবা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মুরাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে কবরস্থান থেকে নবজাতক উদ্ধার
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.এম এ মোমেন জানান, শিশুটি বর্তমানে শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের দিকে রিমি (২৬) নামের এক নারী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণের জন্য আসেন। সকাল ৮ টার দিকে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর ওই নারীকে ওয়ার্ডে পাঠানো হলে তিনি সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতক সন্তানকে ফেলে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান।