সরকারি কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী 'বাংলা ব্লকেড' পালন করছে কোটাবিরোধীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। এসময় ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বরিশালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ২টি পয়েন্টে অবরোধ করছে শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কের নথুল্লাবাদে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কে অবস্থান নেয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।
অবরোধের কারণে সারাদেশের সঙ্গে বরিশালের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। মহাসড়কের ৫ কিলোমিটারের বেশি এলাকা জুড়ে তীব্র যানজটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছে যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার: বুধবার সারা দেশে 'বাংলা ব্লকেড'
কুমিল্লায় বেলা ১১টার দিকে কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়াও খুলনার ব্রজলাল কলেজের (বিএল) শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টার দিকে নতুন রাস্তা এলাকায় রাস্তা দখলে নেয়। তারা রেললাইন অবরোধ করে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এদিকে সকাল পৌনে ১০টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা জব্বার মোড় এলাকায় ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেস থামিয়ে রেললাইনে ব্যারিকেড দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। বাংলা ব্লকেডের সমর্থনে ক্যাম্পাসে মিছিলও করে তারা।
এর আগে মঙ্গলবার কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত 'বাংলা ব্লকেড’ চালানোর ঘোষণা দিয়েছিল।
এ অবরোধের কারণে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সড়ক ও রেলপথে যান চলাচল বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ব্যাপক জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: 'বাংলা ব্লকেড': ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে গতকাল আপিল বিভাগে আবেদন করেন আন্দোলনকারীরা।
এর আগে গত ৪ জুলাই রিট আবেদনকারীর আইনজীবী অনুপস্থিত থাকায় হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন হাইকোর্ট।
সরকারি চাকরিতে বিভিন্ন কোটায় ৫৬ শতাংশ পদ সংরক্ষিত রাখা কোটা পদ্ধতি ২০১৮ সালে বাতিল করা হয়। এই সিদ্ধান্তকে ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীরা চ্যালেঞ্জ জানায়, যার ফলশ্রুতিতে ২০২৪ সালের ৫ জুন মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ে ৪ সপ্তাহের স্থিতাবস্থা