করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশ একদিনে সর্বোচ্চ ২৬৪ জন মারা গেছেন। এর আগে ২৭ জুলাই ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এনিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৯০২ জনে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে আরও ১২ হাজার ৭৪৪ জন। এনিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ২২ হাজার ৬৫৪ জনে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ হাজার ৯৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার ২৭.১২ শতাংশ। দেশে এই পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর হার ১.৬৬ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় ১৫ হাজার ৭৮৬ জনসহ মোট সুস্থ হয়েছে ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৩ জন। সুস্থতার হার ৮৭.৪৭ শতাংশ।
দেশে করোনা আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশ ডেল্টায় সংক্রমিত: বিএসএমএমইউ
দেশে জুলাই মাসে মোট কোভিড সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আর ১ শতাংশ হচ্ছে সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ ফলাফল পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ ফল প্রকাশ করেন।
চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত গবেষণা চালানো হয়। জিনোম সিকোয়েন্সিং রিসার্চ প্রজেক্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উপাচার্য নিজেই।
তিনি বলেন, করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং গবেষণার উদ্দেশ্য ভাইরাসটির জিনোমের চরিত্র উন্মোচন, মিউটেশনের ধরণ এবং বৈশ্বিক ভাইরাসের জিনোমের সঙ্গে এর সম্পর্ক বের করা এবং বাংলাদেশি কোভিড-১৯ জিনোম ডাটাবেজ তৈরি করা।
গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ। ৯ মাস থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স পর্যন্ত রোগী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
গবেষণায় বলা হয়, যেহেতু কোনো বয়স সীমাই কোভিড-১৯ এর জন্য ইমিউন করছে না, তাই বলা যাবে না যে শিশুদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণের কোনো ঝুঁকি নেই।
এছাড়া যাদের ক্যান্সার, শ্বাসকষ্ট এবং ডায়াবেটিসের মতো সংক্রমক রোগ রয়েছে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি। একই সাথে ৬০ ঊর্ধ্ব রোগীদের দ্বিতীয়বার সংক্রমণ হলে সেক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি বেশি বলে জানানো হয়।
গবেষণায় বলা হয়, দেশে গত ডিসেম্বরে ইউকে বা আলফা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। পরে মার্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, সাউথ আফ্রিকান বা বেটা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমণ হার বেশি ছিল। গত এক মাসের ৩০০ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে দেখা যায়, মোট সংক্রমণের প্রায় ৯৮ শতাংশ হচ্ছে ইন্ডিয়ান বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।
বিশ্ব পরিস্থিতি
বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের নতুন ডেল্টা ধরনের কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগী ও আক্রান্তদের মৃত্যু সংখ্যা। বর্তামানে ডেল্টার নতুন ধরন ‘ডেল্টা প্লাস’ শনাক্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৪২ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৬ জন এবং মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ কোটি ১ লাখ ৩৬ হাজার ৪১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৪২৬ কোটি ৫৪ লাখ ৭০ হাজার ৩৯৩ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৩১ হাজার ৬৮৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৭৯৭ জন।
এদিকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারত মোট ৩ কোটি ১৭ লাখ ৬৯ হাজার ১৩২ জনের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের স্থানে অবস্থান করছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৭৫৭ জনে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬০৭ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২ কোটি ২৬ হাজার ৫৩৩ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
আরও পড়ুন: ১০ আগস্ট পর্যন্ত লকডাউন বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি