বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারির ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের প্রতিনিধিরা তাদের ধারাবাহিক সহায়তার অংশ হিসেবে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার ইবনে সফি আব্দুল আহাদের কাছে বৃহস্পতিবার এসব সরঞ্জাম হস্তান্তর করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে পিপিই বিতরণ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে এগুলো দেয়া হয়েছে।
প্রথম ধাপে গত ১১ মে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে পিপিই ও চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হয়।
বৃহস্পতিবার ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দেয়া সরঞ্জামাদির মধ্যে ছিল ৭০০টি কেএন৯৫ সার্জিক্যাল মাস্ক, ৫০০টি ২০০ মিলি বোতলের হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫০০ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লাভস, ৩০০টি বিপজ্জনক পদার্থ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়াল (হ্যাজম্যাট) স্যুট, ৫০টি মুখমণ্ডল সুরক্ষার শিল্ড, ৫০ পাউন্ড ব্লিচ পাউডার, ১০টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, ৬টি জীবাণুনাশক স্প্রেয়ার এবং তিনটি রোগী দেখার মনিটর/পালস অক্সিমিটার মেশিন। যার সবই বাংলাদেশি বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা হয়েছে।
এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোভিড-১৯ এর বিস্তার মোকাবিলার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম গ্রহণে বাংলাদেশ সরকারের চলমান উদ্যোগগুলোর আওতায় দ্রুত রোগনির্ণয় উন্নত করা, জ্ঞান বৃদ্ধি, রোগ সম্পর্কিত গুজব ও ভুল ধারণা দূরীকরণ এবং সম্মুখ সারির কর্মীদের সহায়তা প্রদানে ২৫.৭ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
সরকার ঘোষিত কোভিড-১৯ চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করোনাভাইরাস মোকাবিলা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে।
এ পিপিইগুলো পাওয়ার ফলে হাসপাতালের কর্মীরা কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে রোগীদের সেবা প্রদানকালে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় চিকিৎসা বিষয়ক ঘাটতি চিহ্নিত করে সেগুলো পূরণে বাংলাদেশ সরকারের সাথে নিবিড় সহযোগিতার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে কাজ করছে। এরই অংশ হলো ঘোষিত কোভিড-১৯ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র এবং প্রাথমিক সেবাদানকারীদের জন্য পিপিই ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে বিতরণ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে পিপিইগুলো স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত করা। যা অনেক উদ্যোগের অন্যতম। এ বিতরণ বাংলাদেশি জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অব্যাহত অঙ্গীকার এবং দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শক্তিশালী অংশীদারিত্ব প্রকাশ করছে।
কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সারা বিশ্বে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা খাতে এবং মানবিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে বিশেষত সরকার, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এ মহামারি মোকাবিলায় ৯০ কোটি ডলারের অধিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিগত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশকে দেয়া ১০০ কোটি ডলারের অধিক স্বাস্থ্য সহায়তার ধারাবাহিকতায় অতিরিক্ত আড়াই কোটি ডলার সহায়তা সারা দেশে রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে ব্যয় হবে।
এ অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য মানসম্পন্ন জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে রোগীদের চিকিৎসা দিতে কর্মরত কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এ পিপিই দিতে পেরে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস গর্ব বোধ করছে।
এ হাসপাতালের সম্মুখ সারির কর্মীরা প্রাথমিক সেবাদানকারীদের সাথে কাজ করছে এবং প্রতিদিন অসাধারণ সেবা দেয়ার মাধ্যমে এ সংকট মোকাবিলা করে যাচ্ছেন।