চট্টগ্রামে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ-স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগের দায় থেকে সাবেক এক মন্ত্রীপুত্রসহ ৫ আসামিকে দায়মুক্তি দিতে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. আতিকুল হক।
এতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) গ্রাহক ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানসহ অন্য যাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, ব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
চট্টগ্রাম আদালতের দুদকের জিআরও আবদুল লতিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: কৃষি ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিনি বলেন, ‘দুদক একটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। মামলার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।’
জমা দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দুদক উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায়, এম এ সালামের স্ত্রীর কোনও অভিযোগ না থাকায়, সরকার কোনও আর্থিক ক্ষতি না হওয়ায় এবং ঘুষ লেনদেনের কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।’
দুদক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ, স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের (বর্তমানে মৃত) নামে বরাদ্দ করা ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার সংযোগ ছিল। এরমধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও থানার সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজে সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামা করা হয়। সালাম ও মুজিবুরের গ্রাহক সংকেত পৃথক হওয়ায় সংযোগ স্থানান্তরে আইনগত কোনও বৈধতা নেই। এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি নতুন সংযোগ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত এসব সংযোগ দেওয়া হয়। মামলা করার পরদিন অবৈধভাবে দেওয়া ২২টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কেজিডিসিএল।
আরও পড়ুন: চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম
দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া ৪৭৩ নথি আদালতে দাখিলের নির্দেশ