তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খানকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শুক্রবার বিকালে দাফন করা হয়েছে।
জুমার নামাজের পর গুলশানের আজাদ মসজিদে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে মসজিদ প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হয়।
জানা যায়, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের (জিকে) প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: আকবর আলী খানের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
আগের দিন আকবর আলি খানের মরদেহ গুলশানে তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার আত্মীয়স্বজন, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান।
আকবর আলী দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গতকাল রাতে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
তার মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি) ও বাংলাদেশ ইকোনমিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠন শোক ও গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আকবর আলী খান ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর তিনি কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেন এবং অর্থনীতিতে এমএ এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: আকবর আলী খানের মৃত্যুতে জিএম কাদেরের শোক প্রকাশ
কর্মজীবনে ড. আকবর আলী খান টানা তিন সরকারের মেয়াদে সাড়ে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় অর্থ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ সালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব নিযুক্ত হয়ে ২০০২ সালে এই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
চাকরি জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ, পরিকল্পনা, বাণিজ্য, ডাক, টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিযুক্ত হন। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ব্যর্থতার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছিলেন তিনি। এরপর ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সময়কালে তিনি রেগুলেটরি রিফর্ম কমিশনের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও ইতিহাসে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১০ সালে বাংলা একাডেমির ফেলো নির্বাচিত হন।