জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায় পূর্বের ছয় শতাধিক নদীর নাম এবং ৩৭ হাজারেরও বেশি দখলদারের নাম মুছে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের নদী গবেষণা সংস্থা এবং নদী ও প্রকৃতি রক্ষায় ব্রতী বিশেষজ্ঞ ও সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা।
'প্রাণ- প্রকৃতি- পরিবেশ- প্রতিবেশ রক্ষা আন্দোলন' সংগঠক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, নদীরক্ষাই যে সংস্থার পবিত্র দায়িত্ব, তাদের কাছে জাতি এটা আশা করে না। তবে এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরূদ্ধে ত্বরিৎ ব্যবস্থা নেওয়ায় আমি নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে 'নোঙর ট্রাস্ট' আয়োজিত 'জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন থেকে দখলদারের নাম মুছে দেওয়া এবং নদীর সংখ্যা কমানোর প্রতিবাদে সেমিনার'-এর প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, নানা অভিযোগে গত ১৮ অক্টোবর জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের পদে চুক্তিতে থাকা মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরীর নিয়োগ বাতিল করা হয়।
সেমিনার আয়োজক নোঙর ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুমন শামস বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন দেশের নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা অনুসন্ধান না করে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ নদীর সংখ্যা ১০০৮ টি নির্ধারণ করে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেছে। অথচ নদীমাতৃক এ দেশে আরও ছয় শতাধিক নদ-নদীর অস্তিত্ব এখনো রয়েছে।
আরও পড়ুন: কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল: যা জানা দরকার
তিনি বলেন, এছাড়াও সম্প্রতি ৩৭ হাজার ৩৯৬ নদী দখলদারের তথ্য মুছে আরও একটি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।
শামস বলেন, দেশ, মানুষ ও প্রকৃতির স্বার্থে নদী ও দখলদারের তথ্য পুণরায় সমীক্ষার মাধ্যমে তুলে ধরাই এই বিতর্ক অবসানের একমাত্র পথ।
নদী গবেষণা ইনিস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা প্রকৌশলী ড. আলাউদ্দীন হোসেন, রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ, নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এনডিএফ) চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা সেমিনারে বিশেষ বক্তার বক্তব্য দেন।
নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকীর মূল প্রবন্ধের ওপর বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ইনিশিয়েটিভ ফর পিস চেয়ারম্যান এড. শফিকুর রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন: নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানকে অপসারণে উদ্বেগ প্রকাশ টিআইবির
উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে নদী-খালের ক্ষতি করা যাবে না: প্রধানমন্ত্রী