নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করে বিভাগটির গেটে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীকে ছাড়িয়ে আনতে ৩ শিক্ষকসহ থানায় অবস্থান করছেন তারা।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম আকরাম হোসেন। তিনি জবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) আকরামের সঙ্গে ঘটা ঘটনার প্রতিবাদে ক্লাস পরীক্ষা বয়কট করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল (রবিবার) স্নাতকোত্তরের সনদ তুলতে বিশ্ববিদ্যালয় এসেছিলেন আকরাম। সেখান থেকে তাকে আটক করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকরামকে মারধরের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ছাত্রদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, প্রথম বর্ষে থাকার সময় তাদের নেতাকর্মীদের ওপর দলবদ্ধ হামলা চালিয়েছিলেন আকরাম ও তার বন্ধুরা।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আকরাম। তিনি বলেন, ‘প্রথম বর্ষে থাকার সময় ছাত্রলীগের বড় ভাইয়েরা আমাকে মিছিলে নিয়ে যেত। কিন্তু এরপরে আমি আর কখনো ছাত্রলীগ করিনি। আমার কোনো পোস্ট-পদবি কিছুই নেই। আমি জুলাই আন্দোলনেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছি।’
এদিকে, এ ঘটনায় বিভাগে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। আকরামকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় অবস্থান করছেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল ফকির বলেন, ‘আকরাম ভাইকে ট্যাগিং দিয়ে অন্যায়ভাবে থানায় দিয়েছে ছাত্রদল। আমরা যখন তাকে ছাড়াতে থানায় আসি, তখন আমাদের বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অথবা উপাচার্য না বললে আকরাম ভাইকে ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে আমরা বিভাগে তালা দিয়েছি। আমরা তিনজন শিক্ষকসহ এখন থানায় অবস্থান করছি।’
আরও পড়ুন: পিএসসির সংস্কারসহ ৭ দফা দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফরহাদ বলেন, ‘আকরাম ভাই খুবই মেধাবী মানুষ। বিভিন্ন জার্নালে তার লেখাও প্রকাশিত হয়েছে। সনদ তুলতে এলে তাকে মারধর করে থানায় দেয়া হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিভাগের অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা জানান, গেটে এখনও তালা দেওয়া রয়েছে।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন কুমার দাস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থানায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।