জলবায়ু পরিবৃর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জলবায়ু সহনশীল ফসল উৎপাদনে অধিকতর গবেষণা এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প শস্য চাষের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন বক্তারা।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ড এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্বব্যিালয়ের (বাকৃবি) মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাববিষয়ক একটি সেমিনারে তারা এসব সুপারিশ করেন।
শনিবার (৯ মার্চ) বাকৃবির কৃষি অনুষদের সম্মেলনকক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় ‘খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও জনসাধারণের জীবিকার উপর জলবায়ুর প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতি কমানো ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট প্রভাবের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠার উপায় অন্বেষণে গুরুত্বারোপ করেন দুই দেশের অধ্যাপকেরা।
সেমিনারে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সালফোর্ডের অধ্যাপক বিঙ্গুনাথ ইনগিরিগে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন কেবল একটি নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়। এটি একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, যদি একটি দেশও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী হয় এর প্রভাবে বিশ্বের প্রতিটি দেশকেই ভুগতে হবে।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে এনএসটির অর্থায়নে বিটরুট গবেষণায় দ্বিগুণ ফলন
এসময় তিনি জলবায়ুর পরিবর্তনে কৃষিতে বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিধসের প্রভাব আলোচনা করেন।
কৃষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে জীবিকার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি উৎপাদন যেমন কমেছে, দারিদ্র্যের হারও বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঋতুর পরিবর্তন ঘটেছে।
এ কারণে উচ্চ ফলনশীল কিছু কিছু ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, যা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর কৃষকদের জীবিকা ও অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
দেশের কৃষিতে জলবায়ুর প্রভাব কমানো ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপায় সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, প্রচলিত সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফসল রোপণ এবং কাটার সময়কাল জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। জলবায়ু সহনশীল ফসল উদ্ভাবনে অধিক গবেষণা করতে হবে এবং প্রচলিত ফসলের বিকল্প ফসল চাষ করতে হবে।
সেমিনারের এক পর্যায়ে পর্যায়ে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়।
এ পর্বে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষিতে নদীর ভূমিকা, উচ্চ ফলনশীল ও রপ্তানিযোগ্য কৃষি পণ্য উৎপাদনে গুরুত্বারোপ, চাষাবাদে অল্প পানি ব্যবহারে উচ্চ ফলন ও ভূগর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমানোর উপায়, স্বল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায় এমন ফসল উৎপাদনে জোর দেওয়া, কৃষি উৎপাদনে জ্বালানির প্রভাব কমিয়ে সৌরশক্তির ব্যবহার, কৃষকদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনে কৃষকদের শহরমুখী হওয়ার কারণ এবং কৃষি উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও এনজিওর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
এছাড়া সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. গোলাম রাব্বানী, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আবেদীন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: বাকৃবিতে তিন দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় অনুষ্ঠিত
দেশে কম খরচে ও স্বল্প সময়ে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবনের দাবি বাকৃবি অধ্যাপকের