জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়— এটি ’৫২-র ভাষা আন্দোলন ও ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিকতা বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান খান।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি) আয়োজিত “জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ” শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান ছিল রাজনৈতিক অনিবার্যতা। ১৯৫২ ও ১৯৭১-এর আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের ভোটাধিকার হরণের বিরুদ্ধে এই অভ্যুত্থান ঘটে। যুবক, ছাত্র-ছাত্রী ও নারীদের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। এখন আমাদের লক্ষ্য— গণতান্ত্রিক সমাজ ও নতুন ধারার রাজনীতি গড়ে তোলা।”
তিনি আরও বলেন, “আগামীর বাংলাদেশে আমরা ফ্যাসিবাদবিহীন, মূল্যভিত্তিক রাজনীতি চাই। এজন্য চাই নতুন নেতৃত্ব, সচেতন নাগরিক ও দায়িত্ববান শাসক। আর তা সম্ভব একমাত্র সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে।”
এ সময়ে মার্কিন হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্যা গালিব বলেন, “আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনৈতিক ব্যবহারে আজ ফ্যাসিস্ট ধারায় রূপ নিয়েছে। একই ধরনের অপব্যবহারে এনসিপিও সেই পথ অনুসরণ করতে পারে যদি জুলাই বিপ্লবের আদর্শকে রাজনৈতিক অস্ত্র বানানো হয়।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ২০০৮ সালের নির্বাচন আমাদের মতে স্বচ্ছ ছিল না। বিভিন্ন সময়ে আমাদের সুযোগ এসেছে, যা আমরা হারিয়েছি— তার থেকে শিক্ষা নিয়ে জুলাইয়ের সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
আরও পড়ুন: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঢাবিতে কনসার্ট ও ড্রোন শো
‘আমাদের মূলত ভালো শাসক, ভালো লোক ও ভালো নাগরিক দরকার— যাতে ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশনগুলো,’ বলেন তিনি।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরডিসি’র সাধারণ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক এবং সভাপতিত্ব করেন আইআরডিসি সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসেন।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমীন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা।