জেলা পরিষদকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করতে আইন সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদ আইনকেও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি আয়োজিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে জেলা পরিষদকে শক্তিশালীকরণ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করা হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে জেলা পরিষদ আইন সংশোধনের কাজ চুড়ান্ত করা হয়েছে, যা মন্ত্রী পরিষদ সভায় উত্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। আজকের এই সভার মাধ্যমে অথবা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের যদি যৌক্তিক কোনো মতামত ও পরামর্শ থাকে তাহলে সেগুলোকেও আমলে নিয়ে সংশোধন করে আইনকে যুগোপযোগী করা হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কয়েকটি জেলায় ১৩-১৬টি উপজেলা রয়েছে। আবার কোনো জেলায় তিনটি অথবা পাঁচ থেকে ১০টি উপজেলা রয়েছে। কিন্তু সকল জেলা পরিষদ সদস্য সংখ্যা ২০ জন।
অন্যদিকে প্রত্যেক জেলা আর্থিকভাবে সমান নয়। তাই সংশোধিত আইনে প্রতিটি উপজেলা থেকে একজন করে সদস্য এবং তিনটি উপজেলা থেকে একজন নারী সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া পৌরসভা থেকে মেয়র/প্রতিনিধি পরিষদে সদস্য থাকবেন।
দেশের উন্নয়নে জেলা পরিষদকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম জানান, কোনো প্রতিষ্ঠানই একদিনে শক্তিশালী ও সক্ষম হয় না। কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। এই কর্মশালায় সকলের পরামর্শ এবং মতামত গ্রহণ করে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী জেলা পরিষদ গঠন এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার আহ্বান স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের সত্যিকার চ্যাঞ্জম্যাকার জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে একটি পরিকল্পিত দেশ দরকার। তাই শহর-নগর, গ্রাম-গঞ্জ সবজায়গাতেই পরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
পরিকল্পনাবিদ নিয়োগসহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের উত্থাপিত বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান তখনই মর্যাদাশীল হয় যখন তার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকে। জেলা পরিষদেও এটি নিশ্চিত করতে হবে।
মন্ত্রী জানান, বিশ্বের যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের সম্প্রীতির বন্ধন অত্যন্ত শক্তিশালী। এই ভূখণ্ডে সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করে। দেশের এই সম্প্রীতির বন্ধনে আঘাত করার জন্য অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে সবাই মিলে এক সাথে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির চেষ্টা করছে বিএনপি: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি এবং সুইজারল্যান্ডের অ্যাম্বাসেডর নাথালিয়া চুয়ার্ড।
এছাড়া, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশ/সংস্থার প্রতিনিধি অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।