ঝিনাইদহে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে গত ১১ মাসে দুই কোটি ৫৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশ ও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।
জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জেলায় অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা আদায় করা হয় বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) সালাহউদ্দীন।
ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের তথ্যমতে, গত ১১ মাসে মোট নিষ্পত্তি মামলা ছিল পাঁচ হাজার ৮১২। বই ও পজ মেশিন দিয়ে এ সব মামলা করা হয়। এই সময় ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, রেজিস্ট্রেশন বিহীন, হেলমেট, ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করা, উল্টো পথে গাড়ি চালানো ও মোটরসাইকেলে দুইজনের বেশি যাত্রী বহনের দায়ে এক কোটি ৭৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেল চালানোর দায়ে ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ২৯৮ টাকা জরিমানা আদায় করে ঝিনাইদহ বিআরটিএ ও জেলা ট্রাফিক পুলিশ।
আও পড়ুন: দেশের প্রথম তৃতীয় লিঙ্গের ইউপি চেয়ারম্যান ঝিনাইদহের রিতু
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ ট্রাফিকের সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান বলেন, মোটরসাইকেলে মামলা খেতে না চাইলে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। এ জন্য তিনটি পেপারের যে কোনো একটি না থাকলে অবশ্যই মামলা হবে।
তিনি আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন পেপার, ট্যাক্স টোকেন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স অবশ্যই থাকতে হবে। ট্যাক্স টোকেন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ থাকতে হবে। না থাকলে মামলা ও জরিমানা হবে। সেকেন্ডহ্যান্ড বাইক কেনার পর নাম ট্রান্সফার বা পরিবর্তন না করলে মামলা হবে। শিক্ষানবিশ কাগজ আছে কিন্তু পরীক্ষা, ছবি তোলা ও ফিংগার দেয়নি এমন গাড়ির মালিকরা রাস্তায় বের হলে মামলার বিধান রয়েছে। বাইক ড্রাইভ করার সময় হেলমেট পরেননি অথবা আপনি পরেছেন কিন্তু পেছনের যাত্রী পরেননি, তাহলেও মামলা হবে। ট্রাফিক সিগন্যাল না মানলে মামলা হবে।
সার্জেন্ট আসাদুজ্জামান জানান, এছাড়াও উল্টা পথে গাড়ি চালালে, ব্রেক লাইট না জ্বলা, ইন্ডিকেটর লাইট ভাঙ্গা বা না থাকলে, রাতে হেড লাইট না জ্বালালে, ড্রাইভ করার সময় মোবাইলে কথা বললে, নেশা করে গাড়ি চালালে, অনুমতি ছাড়া বাইক মোডিফাই করলে, রঙ পরিবর্তন করলে, ভিআইপি হর্ন, ফগ লাইট ব্যবহার, হ্যালোজেন লাইটের জায়গায় এলইডি হেডলাইট ব্যবহার, মোটরসাইকেলে দু’জনের বেশি যাত্রী থাকলে, অবৈধভাবে পার্কিং করলে, সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করলে, ফুটপাতে মোটরসাইকেল চালালে ও লুকিং বা সেফটি গ্লাস না থাকলে সাধারণত মামলা করা হয়।
আও পড়ুন: ঝিনাইদহে অস্ত্রসহ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক
ঝিনাইদহ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) সালাহউদ্দীন জানান, সড়কে দুর্ঘটনা রোধে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেছি। এতে অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা কমে এসেছে।
তিনি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে কিশোর ও উঠতি যুবকদের বাইক কিনে দেয়া। অভিভাবক যদি সচেতন না হয় তবে মামলা দিয়ে সড়কে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন। তবে ঝিনাইদহ ট্রাফিক বিভাগ এ জন্য সচেতনতামূলক কাজ করে যাচ্ছে।
টিআই সালাহউদ্দীন আরও জানান, কারো হয়রানি ও অর্থদণ্ড করার মানসে ট্রাফিক পুলিশের অভিযান নয়। মৃত্যু হ্রাস ও দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে আইনের আওতায় আসার অভ্যাস এবং নিয়ম মানার জন্যই মূলত ট্রাফিক পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
আও পড়ুন: ঝিনাইদহে সংখ্যালঘুর জমি দখলের অভিযোগ