ঠাকুরগাঁওয়ে আবারও একটি ধূসর ছাই রং এর নীলগাই উদ্ধার হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরচুনা ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রাম থেকে এ নীল গাইটিকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সহায়তায় বিজিবির কাছে নীলগাইটি হস্তান্তর করা হয়।
ইউপি চেয়ারম্যান হিমু সরকার বলেন, বর্তমানে নীল গাইটি সুস্থ আছে এবং বিজিবির জিম্মায় আছে।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার বিকেলের দিকে নীলগাইটি ভারতীয় সীমান্ত (শিঙ্গোর) অতিক্রম করে মাধবপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে। এরপর গ্রামবাসী নীল গাইটিকে দেখতে পেয়ে চারপাশে ঘেরাও করে ধরে ফেলে। তারপর তারা আমাকে খবর দিলে আমি বিজিবি ক্যাম্পে জানাই। আমার এবং পীরগঞ্জ উপজেলা ইউএনও মহোদয়ের উপস্থিতিতে নীল গাইটি বিজিবির কাছে কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, নীল গাইটিকে গ্রামবাসী চারদিকে ঘেরাও করে ধরে ফেলে। পরে আমরা খবর পেলে সেখানে যাই। উপজেলা প্রাণি চিকিৎসককে গাইটি দেখানো হয়েছে। বর্তমানে নীল গাইটি সুস্থ রয়েছে। নীল গাইটিকে বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে মানুষের ধাওয়ায় বিরল নীলগাইয়ের মৃত্যু
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, উদ্ধার হওয়া নীলগাইটি বর্তমানে ভালো রয়েছে। ‘নীলগাই হরিণের মতো নিরীহ। আমাদের দেশে জনসাধারণের জন্য প্রাণিটি লালনপালনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় এর প্রজনন ও বংশবিস্তারের উদ্যোগ নেয়নি প্রাণিসম্পদ বিভাগ।
প্রসঙ্গত, এ নিয়ে গত চার বছরে ঠাকুরগাঁওয়ে পাঁচটি নীলগাই দেখা গেছে। এর মধ্যে অবশ্য চারটিরই মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গত ২৬ নভেম্বর জেলার হরিপুর সীমান্তে মিনাপুর গ্রামে বিরল প্রজাপতির ধুসর লাল রঙের একটি নীলগাই ধরেছিল এলাকাবাসী। কিন্তু ক্ষতবিক্ষত হয়ে রক্তক্ষরনে নীলগাইটি মারা যায়। গত বছরের ২ জুলাই দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় মুক্তার বস্তি থেকে একটি মৃত নীলগাই উদ্ধার করেছিলো উপজেলা প্রশাসন। গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারিতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার নাগর নদীর তীরে একটি কালো রঙের পুরুষ নীলগাই উদ্ধার করে বিজিবি।
এরও আগে প্রথমবার ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রানীশংকৈল উপজেলার যদুয়ার গ্রামের পাশ থেকে একটি নীলগাই উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় নীলগাইটিকে উদ্ধার করে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যায়। সেখানে চার দিন থাকার পর একটি মৃত বাচ্চা প্রসব করে প্রাণীটি। ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ উদ্যানের বেড়ার সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লেগে মারা যায় স্ত্রী নীলগাইটি।