পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব গভীর ও বিস্তৃত হয়েছে, যা তাদেরকে মতভেদ নিয়ে খোলামেলা বিতর্ক করার সুযোগ দিয়েছে।
তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যকার এই ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা তাদেরকে পরিপূরক ও প্রান্তিককরণভাবে পারস্পরিক লাভবান হওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠভাবে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমরা দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বন্ধুদের কাছে অংশীদারিত্বের অনুসন্ধান করেছি এবং (ভবিষ্যতেও) চালিয়ে যাব।’
প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততাকে সংকীর্ণ প্রিজম থেকে না দেখে, বরং উন্নয়নের জন্য তাদের বাস্তবসম্মত অনুসন্ধান হিসেবে দেখা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও দু’দেশের মানুষের মেলবন্ধনের স্মারক হিসেবে 'রুটস অব ফ্রেন্ডশিপ: ৫০ ইয়ারস অব ইউএস-বাংলাদেশ রিলেশনস'- শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে তিনি এ কথা বলেন।
এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টস (ইএমকে) এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও বক্তব্য রাখেন।
শাহরিয়ার বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বে আমরা একসঙ্গে কী করতে পারি তার একটি প্রকৃত উদাহরণ কোভিড-১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই। আমরা বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি মার্কিন সরকারের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করি।’
তবে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডিত খুনি রাশেদ চৌধুরীর দীর্ঘদিনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশে প্রত্যাবাসন গভীর অনুশোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও স্মার্ট দেশ হওয়ার আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৪ কোটির বেশি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঐতিহাসিক ছবি দেখে আপনারা মুগ্ধ হবেন। এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি রাষ্ট্রপ্রধান কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।’
তিনি বলেন, প্রদর্শনীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বকারী সব বাংলাদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের ঐতিহাসিক ছবি প্রদর্শিত হয়, যখন তারা যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ছবিগুলো সুশাসনের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা এবং একটি কার্যকরী গণতন্ত্রের স্তম্ভ হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বোঝায়।
৫০ বছরের বেশি বন্ধুত্বের প্রতিনিধিত্বকারী ঐতিহাসিক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘আমি সুশাসন এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জনে বাংলাদেশকে সমর্থন করার প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।’
আরও পড়ুন: উন্নয়ন অংশীদারিত্বে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ঢাকা ও দিল্লির সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ মাত্রা: প্রণয় ভার্মা