যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু বলেছেন, দুই দেশের জনগণের মধ্যে 'আস্থা পুনস্থাপন' প্রচেষ্টার লক্ষ্যে বাংলাদেশে তার এই সফর।
বুধবার (১৫ মে) সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক উত্তেজনা ছিল।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন লু।
এ সময় দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
'সমৃদ্ধ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক' ভবিষ্যৎ গড়তে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পাশে রয়েছে বলে জানান লু।
লু বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো, কর্মশক্তি জোরদার, নিরাপত্তা সহযোগিতার উন্নয়ন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধার বিষয়ে আমাদের মূল্যবোধ জোরদার করার বিষয়ে অভিন্ন অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে ‘দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে’ ঢাকায় ডোনাল্ড লু
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লু বলেন, তারা সম্পর্ক জোরদার করার উপায় খুঁজে বের করতে চান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জটিল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার কথা বলেছি। আমাদের অনেক জটিল বিষয় রয়েছে- র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা, শ্রম সংস্কার, মানবাধিকার, ব্যবসায়ের পরিবেশ সংস্কার।’
জটিল বিষয়ে কাজ করার উদ্দেশ্যে ইতিবাচক বিষয়গুলোতে সহযোগিতার ক্ষেত্র গড়ে তুলতে চান বলে জানান মার্কিন এই কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা নতুন বিনিয়োগের কথা বলছি, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার ইচ্ছা এবং কীভাবে ক্লিন এনার্জি নিয়ে কাজ করতে হবে সেসব নিয়ে আলোচনা করেছি।’
দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং কর আহরণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র অবাধ, সুষ্ঠু ও অহিংস নির্বাচনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে বলে মনে করেন লু। তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি সাধারণ।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট ও ইস্টার্ন ব্যাংক
পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সম্পর্কোন্নয়নের জন্য লু বাংলাদেশে এসেছেন।
জিএসপি সুবিধা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি পুনরায় চালুর সময় বাংলাদেশকে এটি ফেরত পেতে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়াও বাংলাদেশের রিজার্ভ শক্তিশালীকরণে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দিতে চায় বলেও জানান ড. হাছান।
বৈঠকে কর ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যু ও ফিলিস্তিনে গণহত্যা নিয়েও কথা বলেন তারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি আমাকে বলেছেন, তারাও গাজায় শান্তি দেখতে চান। তারা এ নিয়ে আশাবাদী এবং সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়েছেন।’
এ সময় আরও ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
একই দিনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু। পরে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে পৃথকভাবে আলোচনা করেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৪ মে) 'দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার' করতে এবং একটি উদার, উন্মুক্ত ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রদর্শনে লু ঢাকা সফর করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, জলবায়ু সমস্যা সমাধানে দুই দেশ যাতে আরও সহযোগিতা করতে পারে, সেই লক্ষ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গভীর করাসহ বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা আরও গভীর করার বিষয়ে আলোচনা করতে তিনি বাংলাদেশ সফর করছেন।
আরও পড়ুন: 'বাংলাদেশি ফুচকাই সেরা': ডোনাল্ড লু