রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের আরও সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আইটি একদিকে অপার সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে, অন্যদিকে এর অপব্যবহার ও প্রতারণামূলক কার্যক্রম নতুন অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তাই আইটি বিশেষজ্ঞদের এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সজাগ থাকতে হবে।’
বুধবার কিশোরগঞ্জে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ই-কমার্স ও অনলাইন ব্যবসার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে।
তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি ও প্রতারক অনলাইন ডেলিভারির নামে জনগণের টাকা চুরির ফাঁদ পাতছে। অনেকে অনলাইনে টাকা পরিশোধ করেও কোনো পণ্য পাননি। আবার অনেকে পণ্য পেলেও এর মান খারাপ ছিল।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করলেন রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত
তিনি আরও বলেন, এসব প্রতারক চক্র তথ্য প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার দিয়ে প্রতারণা করছে।
আবদুল হামিদ বলেন, তবে তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করে ই-কমার্স ও অনলাইন ব্যবসার সম্প্রসারণ অব্যাহত রাখতে হবে। ক্রেতাদের লোভনীয় অফার দেখলেই অর্ডার করার বিষয়টি পরিবর্তন করতে হবে।
এই প্রজন্মকে স্বাবলম্বী করতে ফ্রিল্যান্সিং একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে সাড়ে ছয় লাখ সক্রিয় ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। এ খাতে অনেক তরুণের কর্মসংস্থান হয়েছে।
তিনি বলেন, নারীদেরও ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে হবে, যাতে তারাও সমান তালে এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, যারা ফ্রিল্যান্সিং পেশায় সফল হয়েছেন, তাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। বিনিয়োগের মাধ্যমে এ পেশার পরিধি বাড়াতে হবে। বিল গেটস, ইলন মাস্ক, জেফ বেজোসের মতো আইটি জায়ান্টরা এভাবেই তাদের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।
আরও পড়ুন: শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষা দিন: রাষ্ট্রপতি
হামিদ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
তিনি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য উন্নত প্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
দেশের জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশের বয়স ৩৫ বছরের নিচে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের এই বিশাল যুবসমাজকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজে লাগাতে হবে। যাতে তারা এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারে এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
তিনি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তা, পেশাজীবী এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্ববাজারে টেকসই অবস্থান তৈরি করতে মৌলিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের বিকল্প নেই এবং সফটওয়্যারের পাশাপাশি হার্ডওয়্যার শিল্পের উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এ সময় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ইসিকে সাহসের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির