অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে প্রায় দেড় যুগ আগে দায়ের করা দুদকের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন ও মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আসামিদের আপিল মঞ্জুর ও হাইকোর্টের সাজার রায় বাতিল করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ।
মীর নাসির ও তার ছেলে মীর হেলালের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় বিশেষ জজ আদালত একই বছরের ৪ জুলাই মীর নাসিরউদ্দিনকে ১৩ বছর এবং মীর হেলালকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট ২০১০ সালের ১০ আগস্ট মীর নাসিরের এবং একই বছরের ২ আগস্ট মীর হেলালের সাজা বাতিল করে রায় দেয়। পরে হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ৩ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে।
একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে বাবা–ছেলের করা পৃথক আপিল হাইকোর্টে পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আপিলের ওপর পুনরায় শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন। এই রায়ে মীর মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিনকে ১৩ বছরের এবং মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা বহাল রাখা হয়। এর বিরুদ্ধে ২০২০ সালে তারা পৃথক লিভ টু আপিল করেন।
শুনানি শেষে এই লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে সাজা স্থগিত করার আদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার তাদের সাজার রায় বাতিল করে আপিল বিভাগ রায় দেন।
অন্যদিকে, ৪ কোটি ৯৬ লাখ ১১ হাজার ৯১৬ টাকার সম্পত্তির হিসাব ও আয়ের উৎস গোপন করার অভিযোগে ২০০৭ সালের মার্চে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক শাহরিয়ার চৌধুরী।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বিচারিক আদালত এ মামলায় টুকুকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ১৫ জুন তাকে খালাস দেয়।
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে, ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি খালাসের রায় বাতিল করে ফের শুনানির আদেশ দেয় আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে টুকু আবেদন করেন, পরে সে আবেদন খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ। ২০২৩ সালের ২৬ জুলাই বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ টুকুর ৯ বছরের সাজার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন।
আদালতে রায় পৌঁছানোর ১৫ দিনের মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে সেই বছর ১১ সেপ্টেম্বর টুকু আদালতে আত্মসমর্পণ না করায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।