তিনি বলেন, ‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়ে কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাই প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দেয়া হয়েছিল যাতে অতি দ্রুত যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে নতুন তালিকা প্রেরণ করা হয়।’
বুধবার রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবন থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলা প্রশাসক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের সাথে এক সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগের আওতাধীন প্রতিটি জেলার করোনাভাইরাস মোকাবিলা পরিস্থিতি, চলতি বোরো ধান কাটা-মাড়াই এবং সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন মন্ত্রী।
তিনি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অবৈধ কার্ড বাতিলে শক্ত পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের যেকোনো প্রকার হুমকি-ধামকিকে ভয় না করে ও স্বজনপ্রীতির ঊর্ধ্বে থেকে প্রকৃত গরিব ও দুস্থদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা প্রস্তুত করতে বলেন।
মন্ত্রী প্রয়োজনে প্রতিটি উপজেলায় অতীতে তালিকা তৈরি করার সময়ে যে ট্যাগ অফিসার ছিলেন তাদের সরিয়ে নতুন করে কোনো ট্যাগ অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে হালনাগাদ করে নতুন তালিকা প্রণয়ন করার নির্দেশ দেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন যে মার্চ, এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এ পাঁচ মাস খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ৫০ লাখ পরিবারকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল প্রতি কেজি ১০ টাকা দরে প্রদান করা হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মে মাসেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল দেয়া হয়েছে।
সরকারি গুদামের মজুদ বাড়াতে ধান-চাল ক্রয়ে গতি ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘কৃষক বোরোতে এবার বাম্পার ফলন ও ন্যায্য দাম পাচ্ছে। ধান-চাল ক্রয়ে সরকারি সংগ্রহের গতি বাড়াতে হবে। এছাড়া নির্দেশ মোতাবেক খাদ্যশস্যের মান যাচাই করে সংগ্রহ করতে হবে।’
ধান-চাল কেনায় কেউ অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
চালের মান নিয়ে কোনো আপোস নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, লটারি করার পর নির্বাচিত কৃষকের তালিকা যেন ইউনিয়ন পরিষদ অফিসের তথ্যকেন্দ্রে এবং উপজেলা খাদ্য অফিসে দৃশ্যমানভাবে টানানো হয়। নির্বাচিত কৃষক ধান দিতে না পারলে সাথে সাথে তালিকায় অপেক্ষমান কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি কোন কৃষক যেন তার স্লিপ মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়াদের নিকট বিক্রি না করেন এ জন্য মন্ত্রী সাবধান করে দেন।
সভার সমন্বয় করেন খাদ্য সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। এ সময় উপস্থিত জেলা প্রশাসক এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আশ্বস্ত করে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব হবে।