পশ্চিমবঙ্গের পাট কলগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে গেল অর্থবছরে ভারতে পাট রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। যদিও ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে পাটের উৎপাদন কম হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পাটকল শ্রমিকদের পাওনা নভেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিশোধ হবে: মন্ত্রী
গেল অর্থবছরে সারা দেশ থেকে ৩৬০ কোটি টাকা মূল্যের তিন লাখ ৩৮ হাজার ১৮২ বেল পাট রপ্তানি হয়। তার মধ্যে শুধুমাত্র দৌলতপুর মোকাম থেকে ২০৫ কোটি টাকা মূল্যের এক লাখ ৯২ হাজার বেল পাট রপ্তানি হয়। এ সময় এখান থেকে ভারতে ১০২ কোটি টাকা মূল্যের এবং পাকিস্তানে ৬০ কোটি টাকা মূল্যের পাট যায়। ২০১৮-২০১৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানে যথাক্রমে ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের পাট দৌলতপুর মোকাম থেকে রপ্তানি হয়।
ভারত ও পাকিস্তান ছাড়াও যেসব দেশে পাট রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে চীন, নেপাল, ব্রাজিল, বেলজিয়াম, ভিয়েতনাম, আইভেরিকোস্ট, এলসারভাদর, রাশিয়া, ফিলিপাইন, যুক্তরাজ্য ও তিউনিশিয়া।
আরও পড়ুন: খুলনায় পুলিশ ও পাটকল শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ১৫
বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৮৫৪ কোটি টাকা মূল্যের আট লাখ বেল পাট সারা দেশ থেকে রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশ কাঁচা পাট খুলনার দৌলতপুর মোকাম থেকে রপ্তানি হয়। তবে মহামারি করোনার কারণে রপ্তানি প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যান্য বছরের তুলনায় স্থানীয় বাজারে পাটের মূল্য রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। দৌলতপুর পাট মোকামে গত সোমবার প্রতি মণ পাট ৩৬০০ থেকে ৩৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
মোকাম থেকে যেসব প্রতিষ্ঠান কাঁচা পাট রপ্তানি করছে তার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ। রপ্তানিকারক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে সারতাজ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, শহীদ অ্যান্ড সন্স, রিফাত এন্টারপ্রাইজ, মামুন জুট ট্রেডিং, শরীফ ব্রাদার্স, রাজীব জুট ট্রেডার্স, তাসফিয়া জুট ট্রেডিং, উত্তরা পাট সংস্থা, আলম ফাইর্বাস, এসআর অ্যান্ড সন্স, এম এন জুট ট্রেডিং, প্রগতি জুট সাপ্লাই, ইয়াসিন ব্রাদার্স, আকুঞ্জী ব্রাদার্স, রশ্মি কবির, পিনিতাহ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, মন্ডল অ্যান্ড কোম্পানি, রিপন এন্টারপ্রাইজ, ওহাব জুট ট্রেডিং, এবি জুট ট্রেডিং, কসমিক ফাইবার, আরমান জুট ট্রেডিং, এমডি বদরুদ্দোজা, পূরবী ট্রেডার্স, আরএম ট্রেডিং ও ইউএসবি।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে বকেয়া বেতনের দাবিতে পাটকল শ্রমিকদের মানববন্ধন
দৌলতপুর মোকামের পাট রপ্তানিকারক শেখ শহিদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, পাকিস্তান বস্তা তৈরির জন্য পাট ক্রয় করত। করোনাভাইরাসের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে ভাটা ও আম্ফানের কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় সেখানে পাট রপ্তানি কমেছে।
এদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পাটকলগুলো বাংলাদেশের কাঁচা পাটের ওপর নির্ভরশীল। ভারত গোল্ডেন ফাইবারস কোয়ালিটির পাট ক্রয় করে। যা এশিয়ার মধ্যে শুধুমাত্র ফরিদপুর অঞ্চলেই উৎপাদিত হয়।
তিনি জানান, গেল মাসের শেষদিকে ভারতে প্রতি টন কাঁচা পাট ১৫ শ ডলার মূল্যে বিক্রি হয়। ভারতে বিশেষায়িত পাটকলগুলোতে ফরিদপুরের উৎপাদিত পাটের চাহিদাই বেশি। তাছাড়া বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাট রপ্তানিতে খরচ কম পড়ে। মোংলা বন্দর দিয়ে চীন ও পাকিস্তানে পাট রপ্তানি হয়।
আরও পড়ুন:পাটকল শ্রমিকরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে জুনের বেতন পাবেন: মন্ত্রী
উল্লেখ্য, গত ৩ জুলাই থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫ পাটকলের উৎপাদন বন্ধ হওয়ার পর অভ্যন্তরীণ বাজারে ‘গোল্ডেন ফাইবারস’ এর চাহিদা কমেছে।