আওয়ামী লীগ সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ বলে পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের দেশকে গড়ে তুলতে চাই, এখানে ধর্ম বা জাতপাতের কিছু নেই। আমরা জনগণের জন্য কাজ করি, সব মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করি।’
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ধর্মীয় নেতা এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গৌতম বুদ্ধের জন্ম, সিদ্ধিলাভ ও মহানির্বাণ লাভ—এই তিন স্মৃতিবিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত।
আরও পড়ুন: 'সুন্দর জীবনের' জন্য উন্নত ঢাকা গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
এ সময় অগ্রগতি ও ঐক্যের প্রতি তার সরকারের অঙ্গীকারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশে সব সময় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। আমি বিশ্বাস করি, সৌহার্দ্যপূর্ণ চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নে আমরা বিশ্বের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অনেকে আবার বাংলাদেশকে ভিন্ন পথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু নিতে পারছে না। আমাদের মানসিকতা, বাংলাদেশের মানুষ অনেক উদার। আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যেতে পছন্দ করি। এভাবেই আমরা এগোচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গৌতম বুদ্ধের ভাষায় ‘প্রত্যেক ধর্মের মূল নীতি হলো মানবকল্যাণ।’
পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নেও সরকার কাজ করছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি পৃথক তহবিল রয়েছে যেখান থেকে অন্যান্য ধর্মীয় ব্যক্তিদের কেবল ধর্মীয় কর্মকাণ্ডই নয়, অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও উন্নয়নের জন্যও বিশেষ সহায়তা দেওয়া হয়।
দেশে মুসলমান ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় স্থাপনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আসলে জীবিকার জন্য আমাদের প্রায়োগিক শিক্ষা প্রয়োজন। সবাই শুরু থেকেই ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ধর্মীয় উপাসনার স্থানে বসে তারা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানও অনুশীলন করতে পারে এবং ব্যবহারিক প্রয়োজনীয়তাগুলো শিখতে পারে। তার জন্য আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।’
নেপালের লুম্বিনী ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের সঙ্গে সরকারের চুক্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তারা সেখানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি বুদ্ধ মন্দির নির্মাণ করবে কারণ আমরা গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থানে বাংলাদেশের একটি প্রতীক রাখতে চাই।’
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর মধ্যে একটি লুম্বিনিতে। বুদ্ধের জন্মস্থান শান্তির আবাস এবং বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এবং শান্তিপ্রেমীদের জন্য একটি চূড়ান্ত তীর্থস্থান।
বুদ্ধ ৬২৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং শান্তি ও করুণার সার্বজনীন বার্তা প্রচার করেছিলেন। এটি বৌদ্ধ ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের জন্য অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়।
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. জিনবোধি ভিক্ষু, বেদান্ত শিলভদ্র ভিক্ষু এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসির ৪ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী