বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বরিশাল রাডার ইউনিট এবং হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, সর্বোপরি দেশের যেকোনো প্রয়োজনে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়েছেন। এখন সময় এসেছে আমরা তাদের জন্য কতটুকু করেছি বা করছি, তা হিসেব করার।’
বঙ্গবন্ধুর কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ আমরা বলি, আমরা কী পেলাম। বঙ্গবন্ধুর একজন কর্মী হিসেবে সবসময়ই দেখেছি, তিনি নিজে যা বিশ্বাস করতেন, তাই বলতেন। নিজের বা পরিবারের কথা না ভেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণই ছিল তার সকল চিন্তা-চেতনায়।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্যের সাক্ষাত
রাষ্ট্রপতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
শিক্ষক নিয়োগে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে: রাষ্ট্রপতি
তিনি বলেন, ‘এবছর আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করছি। আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব।’
‘বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমেই স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব,’ বলেন তিনি।
সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের ভূ-কৌশলগত অবস্থান, বিশাল সমুদ্রসীমার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নিরাপত্তা বিধান, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা দ্রুত ও সহজতর করতে এবং এই অঞ্চলের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বরিশাল রাডার ইউনিট স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি আশা করেন, নতুন অন্তর্ভুক্ত রাডার বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রাঞ্চল তথা সমগ্র মহীসোপান এলাকায় টহলরত বিমানসমূহকে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করতে এবং তাদের চলাচল ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে।
হেলিকপ্টার উড্ডয়নের জন্য প্রয়োজন দক্ষ এবং সুপ্রশিক্ষিত বৈমানিকের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তিরক্ষা, দুর্যোগ মোকাবিলা, অনুসন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রম, ভিভিআইপি ও ভিআইপি পরিবহনে এসব হেলিকপ্টার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: রায়ের কপির জন্য যেন দিনের পর দিন ঘুরতে না হয়: রাষ্ট্রপতি
উন্নয়নের ধারাকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি চান রাষ্ট্রপতি
ব্যয় এবং সময় কমানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সিমুলেটরটির ভূমিকার কথা বলতে গিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, উন্নত দেশগুলোতে বৈমানিকদের প্রকৃত উড্ডয়নের পূর্বে সিমুলেটরের মাধ্যমে উড্ডয়ন করানো হয়। এতদিন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে কোনো সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউট না থাকায় হেলিকপ্টারের সমগ্র উড্ডয়ন প্রশিক্ষণই বাস্তব উড্ডয়নের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হতো, যা ছিল ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। নবনির্মিত হেলিকপ্টার সিমুলেটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আমাদের বৈমানিকদের উড্ডয়নের একটি অংশ সিমুলেটরের মাধ্যমে সম্পন্ন করবে। ফলশ্রুতিতে, প্রশিক্ষণ ব্যয় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে।
হামিদ বলেন, ‘মনে রাখবেন, আপনারা সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য হলেও এদেশেরই সন্তান। দেশের জনগণেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই আপনারাও দেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার।’
তাই পেশাদারিত্বের নিপুণতা বজায় রাখার পাশাপাশি জনগণের প্রয়োজনে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গবেষণা ও মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টিতে আরও মনোযোগ দিন: রাষ্ট্রপতি