পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে পৌনে দুই কোটি টাকার ওষুধ ও এমএসআর (চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসাসামগ্রী) গরমিলে সত্যতা পাওয়ায় চার চিকিৎসক, স্টোরকিপার ও চার সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দণ্ডবিধির ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় এ মামলা করেছেন বাদী দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ শেখ। শনিবার দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।
আরও পড়ুন: ড. আতিউর-বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
মামলার আসামিরা হলেন— হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও পিরোজপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মিজানুর রহমান, হাসপাতালের সিনিয়র কন্সালটেন্ট (গাইনি) ও সার্ভে কমিটির সভাপতি ডা. ফরাহানা রহমান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নিজাম উদ্দিন, জুনিয়র কন্সালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. সুরঞ্জিত কুমার সাহা, হাসপাতালের স্টোরকিপার মো. আলামীন গাজী এবং ওষুধ সরবরাহকারী এস এম সামসুল আরেফীন (নাজিরপুর), মো. হানিফুল ইসলাম (ঢাকা), মো. জহিরুল ইসলাম (মাগুরা) ও মো. রাশেদুজ্জামান এরশাদ (মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ওষুধ ও এমএসআর সরবরাহকারী চারটি প্রতিষ্ঠান পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের অনুকূলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ওষুধ ও এমএসআর সরবারাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ সরবরাহের কার্যাদেশ প্রাপ্ত চারটি প্রতিষ্ঠান ও সামগ্রী সরবরাহ হয়েছে মর্মে সভাপতিসহ দুই সদস্যকে ১ কোটি ৭৮ লাখ ২৫ হাজার ৩৭ টাকার ওষুধ ও সামগ্রী বুঝে নিয়ে উল্লিখিত অর্থ পরিশোধ করে হাসপাতালের সার্ভে কমিটি। কিন্তু দুদকের এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনাকালে হাসপাতালের স্টক রেজিস্ট্রার ও ওষুধ এবং এমএসআর সামগ্রীর বাস্তব পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করা হয়। নিরীক্ষাকালে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উল্লিখিত ওষুধ ও এমএসআর সামগ্রী স্টক রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভূক্ত থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তা স্টোরে পাওয়া যায়নি। গত ২৭ জানুয়ারি দুদকের অভিযানে এ তথ্যপ্রাপ্তির পর গত ২ ফেব্রুয়ারি ওই ঘাটতি পূরণের জন্য আসামিরা তা সমন্বয়ের উদ্দেশ্যে প্রতারণামূলকভাবে একটি ট্রাকে ওষুধ এনে তা স্টোরে মজুতের অপচেষ্টা করেন। সে সময় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ট্রাকটি জব্দ করে দুদক।
আরও পড়ুন: সাবেক আইজিপি বেনজীর ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পরে এসব অপরাধের অভিযোগ এনে আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক মামলাটি করে। এছাড়া পরবর্তী তদন্তে এজাহারে বর্ণিত অপরাধের সঙ্গে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকেও মামলায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে বলে এজাহারে বলা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডা.মিজানুর রহমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামলার বিষয়ে তিনি এখনও কিছু জানেন না। তবে এ বিষয়ে তদন্ত হলে আসল বিষয়টি উঠে আসবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।