সরকার দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা প্রতিটি বিভাগে মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করব। আমাদের সন্তানদের এখানে শুধু প্রশিক্ষণ দেয়াই হবে না, দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। আর এভাবেই আমাদের বেকারত্ব সমস্যা দূর হবে।’
রবিবার বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৬তম ব্যাচের মুজিববর্ষ গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে চট্টগ্রামস্থ বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্র বিশ্বের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরকার এ বছর পাবনা, বরিশাল, রংপুর ও সিলেটে চারটি মেরিন একাডেমি স্থাপন করেছে।
মেরিন একাডেমির জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণকে যুগোপযোগী করতে ক্যাপ্টেন জাকারিয়া মেরিন সিমুলেশন সেন্টারে ২০১৯ সালে ‘নেভিগেশন সিমুলেটর’ স্থাপন করেছি। এ বছর ‘ইঞ্জিন কন্ট্রোল সিমুলেটর’ স্থাপন করব।
তিনি বলেন, ‘আমরা মেরিন একাডেমিকে বিশ্ববিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে উন্নীত করেছি। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একাডেমির গ্রহণযোগ্যতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে, কর্মসংস্থানে সুযোগ হয়েছে
আরও পড়ুন: চলতি মাসেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী মেরিন ক্যাডেটদের বাংলাদেশের ‘প্রতিনিধি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে দেশের হাজার বছরের পুরনো সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখবে, তোমরা শুধু নির্ভিক সমুদ্রচারী নও, তোমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধি। তোমাদের দেশপ্রেম, সততা, আত্মবিশ্বাস ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করবে। যখন এক দেশের পণ্য আরেক দেশে জাহাজে বয়ে নিয়ে যাবে, তোমরা বাংলাদেশের হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতি তুলে ধরবে।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ৫৬তম ব্যাচের ৩৫৯ জন ক্যাডেটকে করোনা মহামারি থেকে উদ্ভূত সব বাধা মোকাবিলা করে ই-লার্নিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্নাতক হওয়ায় শুভেচ্ছা জানান।
এসময় প্রধানমন্ত্রী পাসিং আউট ক্যডেটদের একটি চৌকস দলের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও নৌপরিবহন সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।
সিনিয়র ক্যাডেট ক্যাপ্টেন নাদিম আহমেদ সকল বিষয়ে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক লাভ করেন। এবং ৫৬তম ব্যাচের ক্যাডেটদের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা পারফরম্যান্সের স্বীকৃতিস্বরূপ চিফ ক্যাডেট ক্যাপ্টেন রাফিদ বিন আলম বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন পদক লাভ করেন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির অ্যাডজুট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা নবীন মেরিন ক্যাডেটদের শপথ পাঠ করান এবং একাডেমি কমান্ডেন্ট ড. সাজিদ হুসেইন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ৫৬ ব্যাচের ক্যাডেটদের গ্রাজুয়েট ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।