প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পানি ব্যবস্থাপনা, রেলপথ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ও তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করি সফরটি অত্যন্ত সফল হবে। এটি আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।’
প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা হবেন।
আরও পড়ুন: দেশকে শক্তিশালী ভিত্তি দিতে জাতির পিতা সবকিছুই করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
বাংলাদেশ মনে করে এই সফর দুই দেশের মধ্যে নতুন ‘সহযোগিতার দ্বার’ খুলে দেবে।
হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যকার আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন সংকট, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও চলমান কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে এই সফরকে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশি চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে চায়।
কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার আগে ২০১৯ সালে শেষবার সফর করার পর তিন বছর পর শেখ হাসিনা ভারত সফরে যাচ্ছেন। এই সফর বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার থেকে আর কোন শরণার্থী নয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এই সফরটি শক্তিশালী ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং পারস্পরিক আস্থা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রধানমন্ত্রী একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন যার মধ্যে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রয়েছেন।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকবেন। শেখ হাসিনার কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ আয়োজিত একটি ব্যবসায়িক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ারও কথা রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেয়া হবে। এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরকালে হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ছাড়াও ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকরের সঙ্গেও দেখা করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শেখ হাসিনার আজমীর সফরেরও সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেয়া মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেবেন।
তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের বংশধরদের বাংলাদেশ সরকারের একটি উদ্যোগ মুজিব বৃত্তি প্রদান করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে শক্তিশালী করার জন্য বঙ্গবন্ধু সবকিছু করেছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী