প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতমুখী অবস্থানের কারণে কমিশন সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সমস্যায় আছি। একটা বড় দল বলছে অংশ নেবে না। আরেক দল বলছে নির্বাচন হবে। রাজনৈতিক পরিবেশে একটা সংশয় আছে।’
সোমবার নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন সিইসি।
যে কোনো উপায়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি আবারও দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে পথ সহজ করবেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। একটি সুন্দর সংসদ ও সরকার গঠন করতে চাই। বিএনপি যা দাবি করছে তাদের সংলাপ ও আন্দোলনের মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে। কারণ এতে সংবিধান জড়িত।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
সিইসি বলেন, প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থাকতে হবে। অন্য কোন উপায় নেই। নির্বাচন যদি সত্যিকারের নির্বাচন না হয় তাহলে ‘আমরা কখনো ভোটের নামে নাটক মঞ্চস্থ করতে যাব না।’
তিনি বলেন, আমাদের কোনো প্রীতি বা বিরাগ নেই (কোন দলের প্রতি)। আমাদের একটাই কাজ: জনগণকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়া। গ্রাম ও শহরে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দিলে আমরা অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করব।’
হাবিবুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের অনেক ক্ষমতা আছে। অতীতে কিছু কারণে হয়তো সেই ক্ষমতা পুরোপুরি প্রয়োগ করতে পারেনি। ‘তবে আমরা এটি প্রয়োগের চেষ্টা করব।’
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়কে ইসির অধীনে আনার প্রক্রিয়া জটিল। এর সঙ্গে সাংবিধানিক বিষয় জড়িত। সব রাজনৈতিক দল নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে সংলাপ করতে পারে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপি যা চায় তা অর্জন করতে পারলে ইসির কোনো আপত্তি থাকতে পারে না।
আরও পড়ুন: কেউ যদি তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ায়, আপনাকেও রাইফেল বা তলোয়ার নিয়ে দাঁড়াতে হবে: সিইসি
তিনি আরও বলেন, আমরা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। আমরা অনুকূল পরিবেশ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে চাই।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ইসির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয়।
এতে নির্বাচন কমিশনারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব এম এ মতিন ইসির কাছে ৯টি লিখিত প্রস্তাব তুলে ধরেন।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনের সময় সাংবিধানিক পদ্ধতিতে স্থানীয় সরকার, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনা।
দলটির মহাসচিব এম এ মতিন বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কখনো স্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। একটি স্বাধীন ইসি দেশকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে। তবে ইসির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।