প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংলাপ শুরু করার উদ্দেশ্যে ইউএনডিপি এবং বেসরকারি খাতের শীর্ষ অংশীদাররা ঢাকায় সোমবার (২৩ অক্টোবর) থেকে তিন দিনব্যাপী এক আলোচনার আয়োজন করেছে।
আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব বিনিময়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন আমন্ত্রিত বাণিজ্যিক নেতা, ফাউন্ডেশন ও ইউএনডিপি’র বিভিন্ন প্রতিনিধি দল এখানে অংশ নিয়েছে।
এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো- বিভিন্ন অংশীদারদের সঙ্গে ইউএনডিপি’র মিলিত উদ্যোগসমূহের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা এবং বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় সাধন করা। যাতে করে এই কার্যক্রমগুলোর সাফল্য তরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় সম্পদ সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।
আরও পড়ুন: বিশ্বের দরিদ্রতম মানুষের জন্য অস্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করোনার সংক্রমণ কমাতে পারে: ইউএনডিপি
অংশীদারদের সঙ্গে এই মতবিনিময় নতুন কিছু শেখার সুযোগ তৈরি করবে, খুলে দিতে পারে আরও নতুন সংলাপের দ্বার এবং ২০২৪ সাল বা আরও বেশি সময় পর্যন্ত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির সম্ভাবনাও তৈরি হতে পারে এই আলোচনার মধ্য দিয়ে।
এ সভায় বেসরকারি খাতের বিভিন্ন অংশীদার এবং ইউএনডিপি’র মধ্যে সরাসরি পারস্পরিক আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে। যেখানে দু’পক্ষের মধ্যে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার এবং এ অঞ্চলের সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
ইউএনডিপি’র উপ-আঞ্চলিক পরিচালক ক্রিস্টোফ বাহুয়ে তার বক্তব্যে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইউএনডিপি’র সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যকার ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক সহযোগিতা এবং জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়নে এ সম্পর্কের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, ইউএনডিপি ও বেসরকারি খাতের এই সহযোগিতামূলক সম্পর্কটি আগামী দিনে আরও বিকশিত হওয়ার দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। ইউএনডিপি ও কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর একসঙ্গে পথচলার এ যাত্রায় আরও অনেক কিছু অর্জন সম্ভব। আঞ্চলিক পর্যায়ের এই পারস্পরিক মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের বিদ্যমান অংশীদারিত্বের পরিসর আরও বৃদ্ধি করতে এবং এ পারস্পরিক সম্পর্কে নতুন নতুন মাত্রা যোগ করার সুনির্দিষ্ট সম্ভাবনাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার তার উদ্বোধনী বক্তব্যে এই আয়োজনটির তাৎপর্য তুলে ধরে বলেনI
স্টেফান লিলার বলেন, ‘বেসরকারি খাত ও ইউএনডিপি এশিয়া প্যাসিফিকের প্রতিনিধিদের এ সম্মিলন থেকে। আমরা আশাবাদ ব্যক্ত করতে চাই, বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তৈরিতে পুরো অঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সকল অন্তর্দৃষ্টি, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা জড়ো করার মাধ্যমে একটি ‘সামগ্রিক আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা হবে।’
স্টেফান আরও বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্কের মাধ্যমে ইউএনডিপি এমন নীতিগুলির পক্ষে এডভোকেসি করে যেগুলো বাণিজ্যিক স্বার্থসমূহকে দীর্ঘমেয়াদে আরও জোরদার করে। আমাদের বিশাল অভিজ্ঞতা ও বেসরকারি খাতের কর্মতৎপরতার এই যুগলবন্দী টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রণীত ‘এজেন্ডা ২০৩০’ এর অভীষ্ঠ অর্জনগুলো বাস্তবায়নে অনন্য ভূমিকা রাখবে।’
সংলাপে উপস্থিত ছিলেন- ইউনিলিভার বাংলাদেশ, ওরাকল, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, ডিএইচএল, স্যামসাং, এসএপি ইন্ডিয়া, এনইসি ইন্ডিয়া, ইউগলেনা, জেট্রো, গ্রামীণফোন ও ইউনিকলোসহ বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিগুলির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ।
এ সংলাপগুলোতে যে বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে সেগুলো হলো- নেটশূন্য অর্থনীতি অভিমুখে ন্যায্য জ্বালানী রূপান্তর, টেকসই উন্নয়নের জন্য যুব ও নারীদের ক্ষমতায়ন, বৃত্তাকার অর্থনীতি, প্রযুক্তি উদ্ভাবন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডিজিটাল রূপান্তরের মতো ক্ষেত্রগুলোতে অংশীদারিত্বের রূপরেখা তৈরি।