বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সঙ্গে তার দপ্তর কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বনের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল এ আগ্রহ প্রকাশ করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তৌফিকুল আরিফ ও সুবোল বোস মনি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, বিশ্বব্যাংকের এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড গ্লোবাল প্রাকটিসের গ্লোবাল ডিরেক্টর মার্টিন ভ্যান নিউকপ, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এগ্রিকালচার ইকোনমিস্ট ক্রিশ্চিয়ান বার্গার, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. আব্দুর রহিম ও প্রকল্পের প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ড. মো. গোলাম রব্বানী সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পশুখাদ্যে ভেজালরোধে ডিসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
এ সময় সম্পদ প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি তুলে ধরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অতীতের চেয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন। করনোসহ কিছু প্রাথমিক জটিলতায় এ প্রকল্পের কাজ সাময়িকভাবে ধীরগতিতে হলেও এখন আর তা নেই। প্রকল্পের আওতায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রায় ৭০০ কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় চার হাজার ২০০ প্রণিসম্পদ সেবা প্রদানকারী নির্বাচন করা হয়েছে, এক হাজার ৫০০ খামারির মধ্যে মিল্ক ক্রিম সেপারেটর মেশিন বিতরণ করা হয়েছে, ৯০ হাজারের অধিক খামারিকে সম্পৃক্ত করে তিন হাজার প্রডিউসার গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এর আওতায় প্রাণী চিকিৎসা সেবা খামারির দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার জন্য ৩৬০টি মোবাইল ফ্যাক্টরি ক্লিনিক ক্রয় করা হয়েছে যার মধ্যে সম্প্রতি ৬১টি বিতরণ করা হয়েছে। প্রকল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় স্লটার হাউস তৈরির মাঠ পর্যায়ের অনেক কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে। তাছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ নীতিমালা, প্রাণিসম্পদ বীমা নীতি প্রণয়ন, প্রাণীদের নিবন্ধন ও পরিচিতি দেয়ার সিস্টেম ও ডাটাবেজ উন্নয়নের কাজ চলছে।’
‘সম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাত তথা পোল্ট্রি, ডেইরিসহ নানা খাতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়নে পরিচালিত প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ হবে’-মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
মার্সি মিয়াং টেম্বন এ সময় বলেন, ‘বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে দেখে শিখছে। বিশেষ করে এ দেশের কৃষি খাত অনেক এগিয়ে গেছে। তবুও এ খাতে বিশেষ করে প্রাণিসম্পদ খাতে আরও অগ্রগতির সুযোগ রয়েছে। এ খাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ গতিশীল করা প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: জীবাণু সংক্রমণে সাফারি পার্কে প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য খাতে বাংলাদেশ স্বর্ণালী অধ্যায় সৃষ্টি করছে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী