বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ)
সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের কল্যাণ এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্বে একটি দায়িত্বশীল পোশাক উৎপাদনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি না যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনো বৈধ ভিত্তি আছে।
গত দুই দিনে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত এলসির একটি অতিরিক্ত ধারা মিডিয়ায় উল্লেখযোগ্যভাবে গুরুত্ব পেয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ বিষয়টি নিয়ে একটি বিবৃত্তি দিয়েছে। বিবৃতিতে সংস্থাটির সভাপতি এসব কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পুরোদমে উৎপাদন কার্যক্রম চলছে: বিজিএমইএ সভাপতি
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা এখনো লক্ষ্য করেছি বিষয়টি নিয়ে মিডিয়ায় সরব আলোচনা চলছে এবং জনমনে এখনো বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা মূল ক্রেতা ও বাংলাদেশে তাদের এজেন্টের কাছ থেকে অফিসিয়াল মন্তব্য পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এই বিবৃত্তির লক্ষ্য হচ্ছে এই বিষয়ে আরও পরিষ্কার করা। আমরা আশা করছি যে এর মাধ্যমে বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তির অবসান ও আতঙ্ক দূর হবে এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়ের উপর থেকে মনোযোগ সরানো সম্ভব হবে।
এতে বলা হয়, প্রথমত, মূল ক্রেতা (ফরাসি প্রতিষ্ঠান) বাংলাদেশ এজেন্টের কাছে তার মাস্টার এলসিতে এই অতিরিক্ত ধারাটি সন্নিবেশ করা যায়নি।
দ্বিতীয়ত, এজেন্ট তার এলসি একটি বাংলাদেশি পোশাক কারখানায় ট্রান্সফার করেছে, যা স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক দুবাই দ্বারা জারি করা হয়েছিল এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক নিজস্বভাবে এলসিতে এই অতিরিক্ত ধারাটি সন্নিবেশিত করেছে।
তাই কোনো ক্রেতা এলসিতে অতিরিক্ত ধারা সন্নিবেশ করেনি, একটি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক তার ক্লায়েন্টের নির্দেশনা ছাড়াই এটি করেছে।
তৃতীয়ত- এজেন্ট নিশ্চিত করেছে যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক দুবাই ইতোমধ্যে এলসি থেকে অভিযুক্ত ধারাটি সরিয়ে বাংলাদেশি কারখানায় হস্তান্তর করেছে। তাই অতিরিক্ত ধারাটি আর বিদ্যমান নেই।
এজেন্ট আমাদের আশ্বস্ত করেছে যে, তারা নিশ্চিত করবে যে বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের কাছে ট্রান্সফার করা কোনো এলসিতে এই ধরনের ধারা সন্নিবেশিত থাকবে না। এলসির এই অতিরিক্ত ধারার ভুল ব্যাখ্যা নিয়ে বিতর্ক ও আলোচনার অবসান হওয়া উচিত।
২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে এলসি সংশোধন করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় আমি সংশ্লিষ্ট ক্রেতা এবং এজেন্টকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, শ্রমিকদের কল্যান এবং পরিবেশবান্ধব শিল্পায়ন নিশ্চিত করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প বিশ্বে একটি দায়িত্বশীল পোশাক উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
আমরা বিশ্বাস করি না যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনো বৈধ ভিত্তি আছে।
আমরা সকল বৈশ্বিক ক্রেতাদের তাদের এলসি’তে এই ধরনের ধারা সন্নিবেশ না করার জন্য এবং তাদের ব্যাঙ্কগুলোকে এই ধরনের অগ্রহণযোগ্য ধারা সন্নিবেশ না করার জন্য আহবান জানাচ্ছি।
আমরা বাংলাদেশি কারখানাগুলোকে তাদের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছি, যাতে করে কোনো এলসিতে এই ধরনের অতিরিক্ত ধারার পুনরাবৃত্তির ঘটনা না ঘটে।
আমরা আমাদের সদস্য কারখানাগুলোকে অনুরোধ করছি, তারা যেন এ ধরনের ধারাসহ এলসি গ্রহণ না করে।
আমি সমস্ত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং অনলাইন মিডিয়াকে অনুরোধ করছি, আমাদের শিল্প ও অর্থনীতির স্বার্থে তাদের প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই স্পষ্টীকরণটি তুলে ধরার জন্য।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী বাহ্যিক বিষয়গুলোর সঙ্গে বাণিজ্যকে জটিল না করার আহ্বান বিজিএমইএর
‘শুধু বাংলাদেশের ক্রেতাদের এলসির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ধারা সমর্থন করে না বিজিএমইএ’