জামায়াত-শিবির ও বিএনপি নেতাকর্মীদের ছোঁড়া পেট্রোল বোমার আগুনে পুড়ে আট জনের মৃত্যুর ঘটনার আট বছরেও বিচার পাননি নিহতের স্বজনরা।
২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে গাইবান্ধা থেকে ঢাকার উদ্যেশ্যে যাওয়া নাপু এন্টার প্রাইজ নামের বাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
বোমার আগুনে পুড়ে বাসের মধ্যেই শিশু নারীসহ ঘটনাস্থলেই চারজন ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজনসহ মোট আট জন মারা যায়। আহত হয় প্রায় ৩৫ জন।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: গাইবান্ধায় বিজয়ী প্রার্থীর হামলায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর মৃত্যু
এ হামলার ঘটনায় গাইবান্ধা থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুবুর রহমান বাদী হয়ে ৭৭ জনের নামে মামলা করেন গাইবান্ধা থানায়। অভিযোগপত্রও দাখিল করা হয়। এর মধ্যে এক ও চার নম্বর আসামির মৃত্যু হয়। অপর ৭৩ জন অভিযুক্ত জামিনে বেড়িয়ে গেছেন। তারা তাদের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন ।
ঘটনায় বাবাকে হারানো শিল্পি খাতুন বলেন ,‘ বাবা হত্যার বিচার চাই। আমি যতো দিন বেঁচে থাকবো এই হত্যাকারীদের বিচার চেয়েই যাবো। হত্যাকাণ্ডের আট বছর পূর্ণ হলো অথচ বিচার হলো না । এর চেয়ে বড় দু:খ আর কি হতে পারে। ’
দুর্ঘটনায় নিহত শিশু শিল্পি দাসের মা সাধনা রানী বলেন ,‘আমার মেয়েকে আমি পাইনি। পেয়েছি তার পুড়ে যাওয়া নিথর দেহ। তাকে আমরা চিনতে পারিনি। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।’
আরও পড়ুন: মা-মেয়েকে ধর্ষণ: গাইবান্ধায় ৩ জিনের বাদশার যাবজ্জীবন
ঘটনায় আহত শাহজাহান আলী বলেন, ‘আমি বেঁচে গেছি কোনো মতে। আল্লাহ আমাকে নিজ হাতে বাঁচার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গের ও চারপাশের যে আট জন মরে গেছে। বিভৎস এ ছবি চোখে ভেসে ওঠে। তখন মাথা ঠিক থাকে না। ’
নিহতের স্বজন ও আহতরা বলেন, ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু ঘটনায় জড়িত জামায়াত শিবির ও অপরাধীদের বিচার হয়নি ,তারা বিচার চান।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদার রহমান বলেন, বিষয়টি দীর্ঘদিন আগের। তাছাড়া অভিযুক্তরা জামিনে বেড়িয়ে তাদের কর্মস্থলে যোগ দিয়েছে।
পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, মামলার অভিযুক্তরা সবাই জামায়াত শিবির ও বিএনপির নেতাকর্মী। তারা উচ্চ আদালতের জামিনে আছেন। মামলার চার্জ গঠন করা হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।