আদালত অবমাননার দায়ে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে, যা অনাদায়ে আরও ৭ দিনের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। জাহাঙ্গীর আলমকে অবিলম্বে দিনাজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। আদালত অবমাননার আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক এবং জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
জানা যায়, বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার হাইকোর্টের রায়কে কেন্দ্র করে আপিল বিভাগের বর্তমান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে ইউটিউবে জাহাঙ্গীরের দেওয়া এক বক্তব্যের সূত্রে আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদনটি করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির তিন সদস্যসহ চার আইনজীবী আবেদনটি করেছিলেন।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা: শুনানি ১৪ আগস্ট
তারা হলেন- মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ, মাহফুজুর রহমান, মনিরুজ্জামান রানা ও শফিক রায়হান।
গত ১৭ আগস্ট এই আবেদনের শুনানি করে আপিল বিভাগ মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ২৪ আগস্ট হাজির হতে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত অবমাননার জন্য জাহাঙ্গীরকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, সে বিষয়ে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।
এরপর ২৪ আগস্ট হাজির হয়ে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ওইদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) শুনানির তারিখ রাখেন। এদিন সকাল ৯টায় জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী তিনি আজ আদালতে হাজির হন।
৩ আগস্ট বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির রায় প্রদানকারী বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন মেয়র জাহাঙ্গীর। ওই বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিষয়টি আদালত অবমাননাকারী দাবি করে আবেদন করেন চার আইনজীবী।
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ২০১১ সালে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২১ সালে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।