জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে দেশব্যাপী দৈনিক এক ঘণ্টা এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে, পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে দৈনিক এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টার লোডশেডিং দেয়া হবে। এক সপ্তাহ পর প্রয়োজনে আমরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবো।’
সোমবার বিকালে নিজ মন্ত্রণালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংশোধিত ঘোষণায় এসব তথ্য জানান প্রতিমন্ত্রী।
এর ঘণ্টাখানেক আগে দিনে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং ঘোষণা করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এ ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সংকট কাটিয়ে উঠতে রেশনিং প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: সরকার অফিসের সময় কমাতে বা ভার্চুয়াল অফিস চালু করতে পারে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠক শেষে উপদেষ্টা এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
নসরুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
তৌফিক-ই-এলাহী বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলো শিডিউলের অধীনে লোডশেডিং পরিচালনা করবে যাতে জনগণ এর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় পায় এবং কোনো ঝামেলা অনুভব না করে।
তবে প্রতিবার আধা ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং চলবে না।
তিনি বলেন, পেট্রোলিয়াম জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ডিজেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকবে এবং শপিংমল ও বাজার রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার মতো কিছু বিকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি অফিসের সময় পুনঃনির্ধারণ করা হতে পারে এবং সশরীরে উপস্থিতির পরিবর্তে ভার্চুয়াল মিটিং অনুষ্ঠিত হবে।
নসরুল তার প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সপ্তাহে একদিন পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। পরিবহন পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
আরও পড়ুন: কাল থেকে এলাকাভিত্তিক ২ ঘণ্টা লোডশেডিং
মসজিদ, মন্দির ও গির্জার মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তারা যেন শুধু নামাজের সময় এয়ার কন্ডিশনার চালু রাখে।
তিনি বলেন, কোনোভাবেই রাত ৮টার পর মার্কেট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করলে ১০ শতাংশ পেট্রোল আমদানি সাশ্রয় হবে এবং পরিবহন খাতে ডিজেলের সাশ্রয়ী ব্যবহারের মাধ্যমে আরও ১০ শতাংশ সাশ্রয় করা যেতে পারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে প্রায় ১০টি ডিজেল চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে যার ১২৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অধিকাংশই বেসরকারি খাতে।